কুষ্টিয়ায় তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শেষ আজ
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের এই আধ্যাত্মিক বাণীর শ্লোগানে তাঁর ১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়িতে চলা তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শেষ হচ্ছে আজ।
আজ বুধবার রাতে আখড়াবাড়ির মূল মঞ্চের আলোচনা সভায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরীর এই লালন স্মরণোৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করার কথা রয়েছে। এবারও পথপ্রদর্শক লালনকে স্মরণ ও অবাধ্য মনকে শুদ্ধ করতে দেশ-বিদেশের হাজারো লালন অনুসারী, ভক্ত অনুরাগী আর দর্শনার্থীরা আখড়াবাড়িতে অবস্থান নিয়েছিলেন।
লালনের রীতি অনুযায়ী পহেলা কার্তিক সন্ধ্যায় অধিবাস, পরদিন দুই কার্তিক সকালে বাল্য ও দুপুরে পূর্ণ সেবার মধ্যদিয়ে সাধুসঙ্গ শেষ হওয়ায় গতকাল বিকেলেই অধিকাংশ লালন অনুসারীরা অতৃপ্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আখড়াবাড়ি ছেড়ে গেছেন। বাকিদের আজ সকাল থেকে গুরুকার্য শেষ করে অন্যদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে লালনের তীর্থধাম ছাড়তে দেখা গেছে।
তৃষ্ণার্ত মন নিয়ে যাবার সময়, পূর্ণতা সাধনের জন্য আবারও লালন স্মরণোৎসবে ফিরে আসার কথা জানিয়েছেন তারা। অডিটোরিয়ামের নিচে যেখানে লালন অনুসারীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে বসে সাধু সঙ্গে অংশ নেন সেই জায়গা আজকে প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে।
তবে আখড়াবাড়ির বাইরে কালি নদীর তীরে বাউল মেলা আজ রাত অবদি চলবে। ঐতিহাসিক এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মৃত্যুর পর থেকে তাঁর স্মরণে লালন একাডেমি ও জেলা প্রশাসন এই লালন স্মরণোৎসব পালন করে আসছে।