কুষ্টিয়ায় পদ্মায় ব্যাপক ভাঙন, নদীগর্ভে কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সাহেবনগর, ৮মাইল, খাদিমপুর, মির্জানগরসহ পাশ্ববর্তী তালবাড়ীয়া ও বাহিরচর ইউনিয়নের প্রায় নয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মা নদীর ব্যাপক ভাঙনে এরই মধ্যে কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে বসতভিটাসহ উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক।
এসব এলাকায় বর্ষা মৌসুমে কিছুকিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিলেও শুস্ক মৌসুমে এমন ভাঙন এর আগে কখনও দেখেননি স্থানীয়রা।
এক্সক্যাভেটর দিয়ে নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি, নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং নদীর উত্তর পাড়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৩০০ মিটার নদী ভরাট করে বাঁধ নির্মাণ করায় নদীর দক্ষিণ পাড়ে ভাঙন এমন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বলে দাবি করছে এলকাবাসী।
তীব্র ভাঙনের ফলে প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে নদী। এদিকে, একমাত্র আয়ের উৎস ফসলি জমি হারিয়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দিশেহারা এখানকার হাজারও কৃষক। অবিলম্বে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাঁদের।
এ ছাড়া ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের দাবিতে মঙ্গলবার নদীর পাড়ে মানববন্ধনও করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সাহেবনগরের মো. মওদুদ আহমেদ রাজিব বলেন, ‘ভাঙনের কবল থেকে আমাদের বাস্তুভিটা ও আবাদি জমি রক্ষার্থে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রয়োজনে আমরা কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নামব।’
বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মেহেদি হাসান অপু বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নদী ভরাট করে বাঁধ নির্মাণ করা এবং কিছু অসাধু ব্যবসায়ী স্ক্যাভেটর দিয়ে নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করার ফলে ও নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে শুস্ক মৌসুমে ভাঙন এমন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুষ্টিয়া কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলছেন, ‘নদীর উত্তর পাড়ে অবকাঠামো নির্মাণ, নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং নদীর বিপরীত মুখে জেগে ওঠা চরের কারণেই এমন ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে, স্থায়ীভাবে ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প হাতে নিয়েছে।’