কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ
কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে জেলার নয়টি উপজেলার ছয় উপজেলার ২০টি ইউনিয়েন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন।
বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে নিম্নাঞ্চল ও নদ-নদীর অববাহিকায় বসবাসকারী চরাঞ্চলের মানুষজন।
অনেক পরিবার নৌকা ও বাঁশের মাচানে আশ্রয় নিয়ে দিন পার করছে। বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পনির সংকট। নিজেদের পাশাপাশি গবাদিপশুর খাদ্য সংকট নিয়েও বিপাকে পড়েছে এসব মানুষ। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এসব চরাঞ্চলের অনেকেই তাঁদের গবাদিপশু নিয়ে উঁচু জায়গায় আশ্রয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বন্যা কবলিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে পাঠদান রেখেছে শিক্ষা বিভাগ।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঝুনকার চরের বাসিন্দা ওহির উদ্দিন বলেন, ‘ঘরের ভেতরে বুক পর্যন্ত পানি উঠেছে। ধারেকাছে উঁচু জায়গা না থাকায় নৌকায় অবস্থান করছি। চুলা জ্বালাতে পারছি না। খুব কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন পার করছি।’
উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের মশালের চরের শমসের আলী বলেন, ‘কোনোরকমে ঘরের মাচান উঁচু করে বউ-বাচ্চা নিয়ে আছি। যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে আর ঘরে থাকারও উপায় থাকবে না।’
অন্যদিকে, পানির তোড়ে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে দুধকুমার নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ১০০ মিটার ভেঙে প্লাবিত হয়ে পড়েছে কয়েকটি গ্রাম।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় নদ-নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।