কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে টিকা আমদানির পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমদানি নিশ্চিত করতে না পারলে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে দেশে করোনার টিকা কার্যক্রম। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ জোর দিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি ও টিকা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য। আর শুধু কাগজে কলমে আটকে না থেকে দেশে টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করারও পরামর্শ তাঁদের।
এ বছরের জানুয়ারিতে দেশে যখন করোনার টিকা কার্যক্রম শুরু হয় তখন অনেক উন্নত দেশেও তা সেভাবে শুরু করতে পারেনি। যা সরকারের বড় সফলতা বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। শুরু থেকেই শুধু অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ওপর নির্ভর না করে অন্য উৎস থেকেও টিকা আমদানির পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন তারা। তবে যে কারণেই হোক না কেন তা সম্ভব হয়নি। ফলাফলে অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ দেওয়া প্রায় ১৪ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া অনিশ্চিত। বুধবার চীনের উপহার হিসেবে পাওয়া পাঁচ লাখ ডোজ টিকা দুই দিনেই শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।
এ বিষয়ে টিকা বিষয়ক জাতীয় কমিটির সদস্য ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের পাইপলাইনে আর কোনো নতুন টিকা নেই। টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশ কঠিন মনে হচ্ছে। ভারতে যে অবস্থা হয়েছে, তারা কবে নাগাদ টিকা রপ্তানি করতে পারবে, বাংলাদেশ কবে নাগাদ পাবে তা অনিশ্চিত। তাও ঘোর অনিশ্চয়তা রয়েছে।’
ডা. বে-নজীর আহমেদ আরও বলেন, ‘চীনের সঙ্গে এখনো চুক্তি হয়নি। রাশিয়ার সঙ্গে এখনো চুক্তি হয়নি। আমাদের ১২/১৩ কোটি টিকার চাহিদা রয়েছে। সে টিকা ২০২১ সালে আমরা পাব না, এটাই নিশ্চিত। রাশিয়ার টিকাটা যদি আমরা মনোযোগ দেই এবং সিঙ্গেল ডোজ স্পুটনিক লাইভ বলতেছে তারা। এই টিকাটা যদি আমরা দুই-তিন কোটি জোগাড় করতে পারি, তাহলে অন্তত দুই-তিন কোটি লোক টিকা পেতে পারে।’
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ বলেন, ‘টিকা উৎপাদন এক বিষয়, আর টিকা আমদানি দুটো পাশাপাশি করতে হবে। এজন্য যে টিকা উৎপাদনটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এতে চার-ছয় মাস হয়তো লেগে যাবে। আমরা টিকা কার্যক্রম ততদিন কি বন্ধ রাখব? আমরা মনে করি, আমদানির মাধ্যমে, কোভ্যাক্সের যে টিকাটা পাওয়ার কথা সেটা যদি আমরা আনতে পারি, তাহলে ধাপে ধাপে আমরা টার্গেট পপুলেশনকে দিতে পারব। আরেকটি লক্ষ হবে, আমরা নিজেরা যাতে টিকা তৈরি করতে পারি। এমনও হতে পারে বছর বছর টিকা লাগতে পারে। দুই বছরও লাগতে পারে।’