কৃষকদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টন ধান কিনবে সরকার : কৃষিমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক আজ রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার সাধরের হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, সরকার চলতি বোরো মৌসুমে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরাসরি প্রান্তিক ক্ষুদ্র চাষিদের কাছ থেকে উপযুক্ত মূল্যে ১৫ লাখ টন ধান ক্রয় করবে। এর ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ উঠে লাভের মুখ দেখবে এবং বাজারে প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশে আগামী দিনে কোনো খাদ্য সংকট হবে না।

আজ রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার সাধরের হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত এক কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, হাওরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান হয়, যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ ধান খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কোনো কোনো বছর আগাম বন্যার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। এ ঝুঁকি কমাতে আমরা কাজ করছি। ১৫/২০ দিন আগে পাকে এমন জাতের ধান চাষে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

মিঠামইন উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বোরো ধান কাটা উৎসবের আয়োজন করে। পরে কৃষিমন্ত্রী ধান কাটার উদ্বোধন করেন ও ধান কাটার যন্ত্র ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার ও রিপার’ কৃষকের মধ্যে বিতরণ করেন।

সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, হাওরের কৃষকদের কল্যাণে সরকার ইতোমধ্যে তিন হাজার কোটি টাকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এ প্রকল্পের আওতায় চলতি বছর থেকে ধান কাটার মেশিন, ধান শুকানোর মেশিন ও ধান রোপনের মেশিন স্বল্প মূল্যে কৃষকদের সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ৭০ ভাগ ভর্তুকিতে কম্বাইন হারভেস্টিং মেশিন ও রিপার মেশিন কৃষকদের প্রদান করছে।

কৃষকদের উদ্দেশে ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, হাওরের বিস্তীর্ণ জমিতে বছরে মাত্র একটি ফসল বোরো ধান হয়। এ ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে উচ্চফলনশীল জাতের ধান যেমন ব্রিধান ৮৯, ৯২ উদ্ভাবন করেছে। আমরা আপনাদের এসব উন্নত জাতের হাইব্রিড ধানের বীজ দেব। আপনার এগুলো চাষে এগিয়ে আসবেন।

হাওরে চাষযোগ্য ধানের জাত উদ্ভাবনের জন্য ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলমান আছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আজকে দিগন্ত বিস্তৃত হাওরে সোনার ধানের যে অপরূপ হাসি দেখা যাচ্ছে, দেশের কৃষকের মুখেও সে রকম অমলিন হাসি ধরে রাখতে চায় সরকার। সরকার কৃষিকে লাভবান ও কৃষকের জীবনমান উন্নত করতে অত্যন্ত উদারভাবে কৃষকদের সার, বীজ, সেচসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ আফজল ও মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আছিয়া আলম বক্তব্য দেন।