কোটালীপাড়ার অগ্নিকাণ্ডে পথে বসেছেন ব্যবসায়ীরা

Looks like you've blocked notifications!
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার ঘাঘর বাজারে গতকাল শনিবারের আগুনে পুড়ে যায় দোকানপাট। ছবি : এনটিভি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার পৌরসভার ঘাঘর বাজারের ঈদের রাতে আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ১৩টি মুদি ও ৩টি জুয়েলারি দোকানসহ অগ্নিকাণ্ডে ৩৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে গেছে। এতে ১০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা ফায়ার সার্ভিসের। যদিও ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ২০ কোটি টাকা। 

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন হওয়ায় বাজারের দু’একটি দোকান ছাড়া প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। রাত ১০টার দিকে আগুনে পুড়তে শুরু কোটালীপাড়া পৌর এলাকার ঘাঘর বাজারের বেপারী পট্টির দোকান। খবর পেয়ে প্রথমে কোটালীপাড়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পরে গোপালগঞ্জ ও টুংগীপাড়া ফায়ার সার্ভিস তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত সাড়ে ৪টার দিকে ওই স্থানে আবারও আগুন জ্বলে উঠলে ফায়ার সার্ভিসের ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ হয়। 

আগুনের খবরে সেখানে যান কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদাউস ওয়াহিদ, কোটালীপাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. জিল্লুর  রহমান। আজ রোববার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।

এই আগুনে ওই বাজারের ব্যবসায়ী পথে বসেছেন। ব্যবসায়ী বাবুল খান জানান, দোকান বন্ধ থাকায় বাড়িতেই ছিলেন তিনি। আগুন লাগার খবর পেয়ে দোকানে গিয়ে দেখতে পান, তার সব মালামাল পুড়ে গেছে। এতে তার প্রায় ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

চাল ব্যবসায়ী বিমল মণ্ডল বলেন, ‘ঈদের আগে গোডাউনে চাল রেখেছি। সর্বনাশা আগুনে সব চাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এক বস্তা চালও বাঁচাতে পারিনি।’

মুরগি ব্যবসায়ী সোহাগ হোসেন বলেন, ‘ঈদ এবং পরবর্তী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য দোকানে প্রচুর পরিমাণে মুরগি ওঠানো হয়েছিল। মুরগিগুলো পুড়ে ছাই হয়েছে। আমি নিঃস্ব হয়েছি। এখন কী করব, সেটাই ভাবছি।’

ক্ষতিগ্রস্ত হোমিওপ্যাথিক ওষুধের পাইকারী ব্যবসায়ী হাফেজ মহিউদ্দিন তালুকদার জানান, তার দোকানে অনেক টাকার ওষুধ ছিল। সেগুলো সব পুরে গেছে।

সংশ্লিষ্ট পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামাল দাড়িয়া বলেন, ‘আগুন নির্বাপণে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি ব্যসায়ী ও সাধারণ মানুষদের সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করেছি। সবার সহযোগিতায় পাশে থাকা ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমেছে।’

ঘাঘর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আগুনে ৩৪টি দোকান সম্পূর্ণ পুড়েছে গেছে। আগুনে ঘর এবং মালামাল পড়ে ব্যবসায়ীদের কমপক্ষে ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। অনেক ব্যবসায়ীরই ব্যাংকে লোন রয়েছে। সরকারি সহযোগিতা না পেলে এ সকল ব্যবসায়ী আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না।’

কোটালীপাড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশণের অফিসার ইনচার্জ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কী কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যাবে। অগ্নিকাণ্ডে ১০ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে আমাদের ধারণা।’