কোদাল দিয়ে মাথা ন্যাড়া : পাঁচ আসামি কারাগারে

Looks like you've blocked notifications!
কক্সবাজারের উখিয়ায় গরু চুরির অপবাদে এভাবে যুবক ছৈয়দ আহমদকে মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতন করা হয়েছিল। ছবি : এনটিভি

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় গরু চুরির অপবাদে এক যুবককে কোদাল দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত পাঁচ আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিন এ আদেশ দেন।

আসামিরা হলেন ওই এলাকার মোহাম্মদ (৫০), মোহাম্মদের ছেলে শফি আলম (৩০), জাহিদ হোসেন (৩৫), আবদুস শুক্কুর (৪৮) ও মোহাম্মদ ইসলাম ওরফে কৈ সালাম (৩২)। ঘটনার মূলহোতা জালাল আহমদ পলাতক রয়েছেন।

বাদীপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান রেজা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মামলার দুই থেকে ছয় নম্বর আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে উখিয়ার পশ্চিম সোনারপাড়ার ছৈয়দ আহমদ নামের এক যুবককে মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতন চালানো হয়। সেই ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়। নির্যাতনের শিকার ছৈয়দ আহমদ ওই এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে।

উখিয়া থানায় যোগ দেওয়া নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্‌জুর মোর্শেদ জানিয়েছিলেন, এ ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং ভিকটিমের বাবা অভিযোগ দিলে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।     

অভিযোগে জানা যায়, গরু চুরির সন্দেহে যুবক ছৈয়দ আহমদকে ধরে নিয়ে যান স্থানীয় জালাল আহমেদ। রাতভর নির্যাতনের পর ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে মাথা ন্যাড়া করে ছেড়ে দেন। নির্যাতনের সময় মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত জালাল আহমদসহ ছয়জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় একটি অভিযোগ দেন নির্যাতনের শিকার ছৈয়দ আহমদের বোন জোবাইদা বেগম।

জোবাইদা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্থানীয় জালাল আহমদ বিনা অপরাধে আমার ভাই সৈয়দ আহমদকে সোনারপাড়া বাজার থেকে ধরে নিয়ে যান। গরু চুরির অভিযোগে নির্যাতন করেন। সারা রাত বাড়ির উঠানে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। গলায় জুতার মালা পরিয়ে কোদাল দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেন। কোদালের আঘাতে আমার ভাই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ রফিক ঘটনাস্থল থেকে আমার ভাইকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।’

জোবাইদা বেগম বলেন, ‘জালাল আহমদের অপকর্মের খবর পুলিশকে জানিয়েছে সন্দেহে আমার ভাইকে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করেছেন।’

 এ বিষয়ে জালাল আহমদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘এলাকায় যাতে আর কোনোদিন গরু চুরির ঘটনা না ঘটে, এলাকাবাসীকে জানাতেই এমনটি করা হয়েছে।’

এ বিষয়টি নিয়ে গত ২৭ সেপ্টেম্বর এনটিভি অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।