কোর্ট গেটে বাইকে আগুনের ঘটনার বিএনপির আসামি যারা

Looks like you've blocked notifications!

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আপিল বিভাগে শুনানির আগের দিন সুপ্রিম কোর্ট গেটে মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের দুটি মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরসহ মোট ১৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘মামলার আসামিগণ জামিন শুনানির রায়কে প্রভাবিত করার লক্ষ্যে এবং বিচার বিভাগকে চাপ প্রয়োগের নিমিত্তে মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করত: ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করিয়া পেনাল কোডের ৪৩৫/৪২৭/ ১০৯/৩৪ ধারা তৎসহ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (১) ধারায় অপরাধ করিয়াছে।’

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ইদ্রিস আলী ও মো. সামসুর রহমান ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দুটি করেন।

গত ১১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হাইকোর্টের মাজারগেট সংলগ্ন পানির পাম্প এলাকা, কদম ফোয়ারার পাশে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের সামনে ও বার কাউন্সিলের গেটে মোট তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতকারীরা। এই ঘটনায় রাজধানীর শাহবাগ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করে।

মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় এখন পর্যন্ত মোট চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। যদিও ওই চারজন এজাহারভুক্ত আসামি নন। বিএনপি নেতাদের অধিকাংশই দুটি মামলাতেই আসামি। 

১২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের দুটি গেট থেকে মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শেখ মোহাম্মদ শামীম এনটিভি অনলাইনকে বলেছিলেন, ‘দুপুরে হাইকোর্টের মাজার গেট এলাকায় বিএনপির একটি মিছিল থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরো দুজনকে হাইকোর্টের বার কাউন্সিল গেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা সবাই বিএনপির নেতাকর্মী। এদেরকে বাইকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া আর কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।’

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার মো. নাইম হাসান (৩১), কুমিল্লার লঙ্গরকোর্ট থানার মির্জা জয়নার আবেদিন হিরণ (৩১), নোয়াখালী সদরের মো. সুজন (৩০) এবং ভোলার বোরহানউদ্দিন থানার ফিরোজ আলম (৫১)।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘হাইকোর্টের গেটে বাইক পোড়ানোর ঘটনায় ১১ ডিসেম্বর রাতে শহবাগ থানার দুজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাদী হয়ে দুইটি মামলা করেন। খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে বাইকে আগুনের ঘটনা ঘটিয়েছিল বিএনপি। তাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীসহ অনেক নেতাকে ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে।’

বিএনপি নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির আগের দিন হাইকোর্ট গেটে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো অন্য লোকজন করতে আসবে? এগুলো খুব সহজেই বোঝা যায়, বিএনপি এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।’

মামলায় আসামি হিসেবে যাদের নাম রয়েছে (এজাহার অনুসারে)

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও মির্জা আব্বাস, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহম্মেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি শফিউল বারি বাবু, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, বিএনপির নেতা মীর সাফায়েত আলী সফু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। 

কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশরাফ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ ও মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, ছাত্রদলের নেতা ও ডাকসুর ভিপি প্রার্থী মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজিব আহসান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কে এম রফিকুল ইসলাম রিপন, প্রেসক্লাব কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. রফিক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নেওয়াজ ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল। 

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক ছাত্রবৃত্তি উপসম্পাদক রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রবিন, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আবুল বাশার সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আবু তাহের,  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি মীর আশরাফ আলী আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শেখ রবিউল আলম রবি, আ ন ম সাইফুল ইসলাম ও আবদুল হান্নান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পটু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসেত আঞ্জু, আতিকুল ইসলাম মতিন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহসভাপতি নবী সোলেমান ও কাজী হযরত আলী। 

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির প্রচার সম্পাদক ভিপি হানিফ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান চেয়ারম্যান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কফিল উদ্দিন ও শামীম পারভেজ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন, বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতা মিজানুর রহমান রাজ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত হোসেন রুবেল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এম এ গাফফার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মজনু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান তালুকদার, বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হোসেন। 

রমনা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি (পূর্ব পরিকল্পনা) মো. ইকবাল হোসেন ইকবাল, রমনা থানা বিএনপির সভাপতি আরিফুর রহমান আরিফ, শাহবাগ থানা বিএনপির সেক্রেটারি  হান্নান, শাহবাগ থানা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম টিটু, ২০ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি মোহন মোল্লা, ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রাইসুল ইসলাম চন্দন ও শাহবাগ থানা বিএনপির সভাপতি আবুল আহসান তালুকদার ননি।