ক্ষমতার অপব্যবহার করলে চরমমূল্য দিতে হবে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, ‘সরকারি কোনো কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরইমধ্যে এটা করা হয়েছে। যিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন, তিনি যে পর্যায়ের কর্মকর্তাই হোন তাঁকে চরমমূল্য দিতে হবে।’
আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সচিব সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
সচিব বলেন, ‘আমি যতদিন এ পদে থাকব আমার কোনো কর্মকর্তাকে ক্ষমতা বা দায়িত্বের অপপ্রয়োগ করতে দিব না। এ বিষয়ে আমি বেশ সচেতন। আপনারা (সাংবাদিকরা) এরমধ্যেই প্রমাণও পেয়েছেন।’
ক্ষমতার অপব্যহারসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করেছে সরকার। আজ সোমবার এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। অপর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (আরডিসি-রাজস্ব) নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।
অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের বাড়িতে মধ্যরাতে হানা এবং তাঁকে তুলে নিয়ে সাজা দেওয়ার ঘটনায় এই চার কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হলো।
এই চারজনের মধ্যে নাজিম উদ্দিন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনে সিনিয়র সহকারী কমিশনার (রাজস্ব শাখা, এলএ শাখা, ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখা এবং আরএম শাখা) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হলের ছাত্র নাজিম বিসিএস ৩৩ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। সাংবাদিক আরিফকে বিবস্ত্র করে ও চোখ বেঁধে নির্যাতন করেন তিনি এবং এনকাউন্টারের মেরে ফেলার ভয় দেখান। বাগেরহাটের মোংলা, মাগুরার মহম্মদপুর ও কক্সবাজারে দায়িত্ব পালনের সময়ও তাঁর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন ও হয়রানির একাধিক অভিযোগ উঠেছিল।
অন্যদিকে রিন্টু বিকাশ চাকমা কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (স্থানীয় সরকার শাখা, রেকর্ডরুম শাখা ও আইসিটি শাখা) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আইন লঙ্ঘন করে মধ্যরাতে বাসায় গিয়ে সাংবাদিক আরিফকে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজার আদেশ দেন তিনি। রিন্টু বিকাশ চাকমা বিসিএস ৩৫ ব্যাচের কর্মকর্তা।
এস এম রাহাতুল ইসলাম কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত, ট্রেজারি ও স্ট্যাম্প এবং প্রবাসীকল্যাণ) হিসেবে কাজ করতেন। মধ্যরাতে সাংবাদিক আরিফের বাসায় অভিযানের সময় তিনিও ছিলেন বলে জানা গেছে।