শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার দুর্ব্যবহার, হুমকি ও কলেজ প্রশাসন নিয়ে কটূক্তি প্রকাশ্যে এলে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করলে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তিনি। আজ শনিবার তাঁর ফেসবুক ওয়ালে সব দোষ স্বীকার করে তিনি লিখেছেন, ‘একান্ত ব্যক্তিগত পরিবেশে হলেও দায়িত্বশীল জায়গা থেকে অসংযত ভাষার প্রয়োগ আমার অপরাধ হয়েছে।’ যদিও রিভা প্রসঙ্গে এখনো নির্লিপ্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

ফেসবুক আইডিতে ক্ষমাপ্রার্থনা করে পোস্টে রিভা লিখেছেন, ‘ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীর সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। এরা আমার পরিবারে সদস্য ছাড়া অন্য কিছু নয়। একান্ত ব্যক্তিগত পরিবেশে হলেও দায়িত্বশীল জায়গা থেকে অসংযত ভাষার প্রয়োগ আমার অপরাধ হয়েছে বলে আমি স্বীকার করছি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আমাকে এমন শিক্ষা দেয় না। তাই সংগঠনের প্রতি আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’

এর আগে গতকাল শুক্রবার রিভার দুর্ব্যবহার ও হুমকির একটি অডিও সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। অডিওতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘এইটুকু সেন্স থাকা উচিত ছিল, রুমটা যেহেতু ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্ট নিয়ে নিছে, ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্টের ওপরে আর কেউ নাই। উল্টাপাল্টা করবি এক পায়ে পাড়া দেব, আরেক পায়ে টেনে ছিঁড়ে ফেলব।’

রিভাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘তোরা লিগ্যাল, তাতে আমার… গেছে। কোন হেডাম দেখাইতে আসিস তোরা? আমার পলিটিক্যাল রুমে তোরা লিগ্যাল থাকবি কি না, সেটা তোদের বিষয়। কে কে টাকা জমা দিছিস? আমারে দিছিস? আর কে লিগ্যাল?’

এ সময় পাশ থেকে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘ও তো অসুস্থ, বাসায় গেছে।’ এ সময় ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘২০২ (রুম নং) এ আর লিগ্যাল কে? তোরা লিগ্যাল তাতে আমার কী… গেছে? বল? আমি কি …… তোদের। চ্যাটাং চ্যাটাং করতাছোস! এক পায়ে পাড়া দিমু, আরেক পা টাইনা ধইরা ছিঁড়া ফেলমু। চার মাস হয়ে গেছে, ফাইজলামি শুরু করছিস!’

এ সময় সুমনা মীর নামে এক মেয়েকে গালমন্দ করতে শোনা যায় রিভাকে। তিনি বলেন, ‘বুঝিস না পলিটিক্যাল রুমে থাকিস? তোদের লিগ্যাল করাইছে তাতে আমার …. কি? আমি যদি একটা সিট না দেই, ২০২ থেকে তোদের কোন বাপ সিট দেবে? ম্যাডামেরা দেবে, ক্ষমতা আছে ম্যাডামদের? ম্যাডামদের ক্ষমতা আছে আমাদের রুম থেকে একটা মেয়েকে বের করার। ইডেন কলেজের প্রিন্সিপালেরও ক্ষমতা নেই এই রুম থেকে একটাকে বের করার। একদম গলায় পাড়া দিয়ে ধরতে ইচ্ছা করতেছে। আগামী এক ঘণ্টার মধ্যে যেই রুমে বলব, সেই রুমে যাবি। আমার সঙ্গে হেডাম দেখাইতে আসে।’

তামান্না জেসমিন রিভার দুর্ব্যবহার, হুমকি ও কলেজ প্রশাসন নিয়ে কটূক্তি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পদক্ষেপ জানতে সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও কোনো প্রতিত্তর মেলেনি।