কারা মহাপরিদর্শক বললেন

কয়েদির পোশাকে মিন্নির ছবি, জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

Looks like you've blocked notifications!
বরগুনার আলোচিত মো. শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। ফাইল ছবি

মো. শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয় গত বৃহস্পতিবার। এরপর মিন্নিকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তরের পর থেকে কারাগারে কয়েদির পোশাক পরা মিন্নির একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে ভিন্ন রূপে দেখা যায় মিন্নিকে।

ছবিতে দেখা যায়, একটি কক্ষে কয়েদির সাদা শাড়ি পরে বেঞ্চের ওপর বসে আছেন মিন্নি। তাঁর চেহারায় ক্লান্তির ছাপ লক্ষ করা যায়।

এদিকে, কয়েদির পোশাক পরা অবস্থায় মিন্নির ছবিটি নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে কীভাবে এই ছবি ছড়িয়ে পড়ল এবং কে বা কারা ছবিটি তুলেছে, সে সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি।

এ বিষয়ে আজ শনিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কারাগার থেকে এ ধরনের ছবি প্রকাশ হওয়ার কথা নয়। কে বা কারা এ ছবি প্রকাশ করেছে, খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, একটি মাইক্রোবাসে করে মিন্নিকে কাশিমপুর কারাগারে আনা হয়েছে। সকালে বরগুনা কারাগার থেকে তাঁকে নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের লোকজন গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা হয়।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনের সড়কে সকাল ১০টা ১০ মিনিটের দিকে প্রকাশ্যে নয়নবন্ড ও তাঁর সহযোগীরা রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের সময় রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। পরের দিন ২৭ জুন মো. আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা (নম্বর ৩১, তাং-২৭/৬/১৯) করেন। এ ঘটনায় দুই ভাগে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম ভাগে সম্পন্ন হয় প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিচার। দ্বিতীয় ভাগে অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিচার হয়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জনের রায় দেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। ওই দিন রায়ে মিন্নিসহ ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণা করা হয়। চারজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ছয় আসামি হলেন রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩), আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), মো. রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯) ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯)।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো. মুসা (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সাইমুন (২১)।

গত মঙ্গলবার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ কিশোরের রায় ঘোষণা করেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ছয়জনকে ১০ বছর, চারজনকে পাঁচ বছর ও একজনকে তিন বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। খালাস দেওয়া হয়েছে তিনজনকে।

আসামিদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন। তার মধ্যে প্রধান আসামি নয়নবন্ড ২০১৯ সালের ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন।