খননকাজের সময় হেলে পড়েছে ভবন, সরানো হলো বাসিন্দাদের

Looks like you've blocked notifications!
চট্টগ্রাম মহানগরে সোমবার একটি চারতলা ভবন হেলে পড়েছে। এ ছাড়াও একটি মন্দিরসহ কয়েকটি বসতঘরে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ছবি : এনটিভি

চট্টগ্রাম মহানগরের সদরঘাটের ফকিরপাড়া এলাকায় একটি চারতলা ভবন হেলে পড়েছে। এ ছাড়াও একটি মন্দিরসহ পাশের বসতঘরে ফাঁটল দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় এরই মধ্যে ভুক্তভোগীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। চারতলা ভবনটি যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গতকাল সোমবার রাতে চারতলা ভবনটি হেলে পড়ার পর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল সোমবার ফকিরপাড়া এলাকায় একটি চারতলা ভবনসহ চারটি বসতঘর হেলে পড়ে। এর মধ্যে দুটি মন্দিরও রয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হেলেপড়া ভবন থেকে লোকজনদের সরিয়ে নেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, জলাবদ্ধতার কাজের জন্য স্থানীয় গোলজার খালের খননকাজ চলমান। খালের প্রশস্ত ও গাইড ওয়াল নির্মাণের জন্য ৪০ ফুট গভীর পর্যন্ত পাইলিংয়ের কাজ চলমান থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো হেলে পড়ছে। এর আগেও একাধিক ভবন হেলে পড়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এদিকে, ফকিরপাড়ার ওই এলাকায় বসবাস করে হাজার খানেক পরিবার। সেখানে রয়েছে শতাধিক ভবন। ওই এলাকার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া গোলজার খালে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় গত বছর থেকে খননকাজ চালাচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। খালের পাড়ে অবস্থিত একটি পাঁচতলা ভবন এর মধ্যে ধসে পড়েছিল। চলতি শীত মৌসুমে আবার খনন শুরু হলে আবারও খালের পাড়ের ভবনগুলো হেলে পড়ার ঝুঁকিতে পড়ে যায়। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তিনটি ভবনে দেখা দেয় বড় ফাঁটল।

এদিকে, ভবন হেলে পড়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকাজুড়ে। অনেক বাসিন্দা নিজ উদ্যোগেই সরে পড়েন। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার লোকজনদের সাবধানে থাকার নির্দেশনা দেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘মাটি খনন করার কারণে পাশের ভবনটি হেলে পড়েছে। পাশাপাশি মন্দিরসহ আরও কয়েকটি ভবন হেলে পড়েছে। সবগুলো ভবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এখানে প্রশাসন এবং স্থানীয় কাউন্সিলর রয়েছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তাঁরা এখানকার সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।’

সিটি করপোরেশনের ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম মো. জোবায়ের বলেছেন, ‘বর্ষা শেষে আবার খননের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ করতে গিয়ে এখানে কতটুকু গভীর আছে, তা তারা চিন্তা করেনি। খালটি আজকের না, অনেক পুরোনো। কর্ণফুলী লেভেলের যে ডিপটা আছে, ওই ডিপে খাল। হয়তো তার চেয়ে দুই-তিন ফুট ওপরে হবে, তার নিচে হবে না। সে কারণে এখানে যারা কাজ করছেন, তাঁরা প্রোটেকশন দিয়েছেন। এখানে এতো বড় ভবন, এতো বড় বসতি, ওই প্রোটেকশনগুলো লোড নিতে পারেনি। সে কারণে ধস নেমেছে। এখানে আসার আগে আমি মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছি। উনি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি থানায় বলেছি, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলেছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ক্ষতিগ্রস্তদের কী ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’