খুলনায় গুলি করে হত্যার ঘটনায় ফের উত্তেজনা, আ. লীগ নেতার বাড়িতে আগুন
গুলি করে ও পিটিয়ে চারজনকে হত্যার ঘটনায় আজও খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন মশিয়ালী গ্রামজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া, জাফরিন, মিল্টন ও তাঁদের এক সহযোগীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে গ্রামবাসী।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এই তিন ভাই ও তাঁর সহযোগীর বাড়িতে আগুন জ্বলছে এবং বাড়ির মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে লোকজন। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উত্তেজনার কারণে কোনো পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের এলাকায় দেখা যায়নি। কোনো মামলা না হওয়ায় কেউ আটকও হয়নি।
এলাকার মরহুম হাসান প্রফেসরের তিন ছেলে জাকারিয়া, জাফরিন ও মিল্টন আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁরা সরকারি দলের নাম ব্যবহার করে এলাকায় অবৈধ সুদ ও মাদক ব্যবসা পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে, পুলিশের পৃষ্ঠপোষকতায় তারা মূলত বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অজপাড়াগাঁয়ে ওই তিন ভাই বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছেন।
এদিকে, গতকাল রাতেই খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মাহাবুবুল সোহাগ ইমেইল বার্তায় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মশিয়ালীর ঘটনায় গুলি করার দায়ে জাকারিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জাকারিয়া খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ও পাটকল শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
উল্লেখ্য, তিন ভাই গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মুজিবর রহমান নামের এক যুবকের বাড়ির পাশে পাইপের মধ্যে বন্দুকের গুলি রেখে ধরিয়ে দেয় পুলিশের কাছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এলাকাবাসী থানায় গেলে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়। একই সময় পাশের এলাকার এক তরুণীকে জাকারিয়ার বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখেন। এ ঘটনা শুনে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে জাকারিয়ার বাড়ি গিয়ে হামলা চালায়। এ সময় বাড়ির ভেতরে থেকে গুলি করলে নজরুল ফকির, রসুল ফকির এবং পরে সাইফুল ইসলাম মারা যান।
এদিকে, গতকাল রাতেই তিন ভাইয়ের সহযোগী জিহাদকে গণপিটুনি দেয় গ্রামবাসী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোর রাতে জিহাদ মারা যান।
খুলনা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার কানাই লাল সরকার জানান, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আসামিদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।