খুলনায় টানা ৩য় দিনে কর্মবিরতিতে চিকিৎসকরা, ভোগান্তিতে রোগীরা
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. শেখ নিশাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে টানা তিনদিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন খুলনার চিকিৎসকরা।
আজ শুক্রবার (৩ মার্চ) নগরীর বিভিন্ন ক্লিনিক ও ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসকদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করা হয়েছে। তবে, জরুরি বিভাগ খোলা রয়েছে। এতে ব্যহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা, ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের।
জানা গেছে, প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা খুলনায় বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখতে আসেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে তারা ধর্মঘটে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করেছেন।
ডা. নিশাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ৬টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন চিকিৎসকরা। বৃহস্পতবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কেন্দ্রীয় কমিটি এবং বিভাগ ও জেলা প্রশসনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ করলে বেলা ১১টায় জরুরি বৈঠকে বসেন খুলনা বিএমএ। বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন বিএমএ’র জেলা সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। এ সময় সাধারণ সম্পাদক ডা. মেহেদী নেওয়াজ উপস্থিত ছিলেন। একইসঙ্গে নতুনভাবে দাবির সঙ্গে যোগ হয়েছে ডা. নিশাত আবদুল্লাহ বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি।
বিএমএ খুলনা জেলা সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম বলেন, ‘আগামী শনিবার (৪ মার্চ) দুপুর ১২টায় শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের সামনে চিকিৎসকদের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং সন্ধ্যা ৭টায় জরুরি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। এই সভায় আগামী কর্মসূচি এবং সরকারি চিকিৎসকদের গণপদত্যাগ ঘোষণা আসতে পারে।’
ডা. বাহারুল আলম আরও বলেন, ‘২৮ ফেব্রুয়ারি ডা. নিশাত আবদুল্লাহ সোনাডাঙ্গা থানায় এএসআই নাইমুজ্জামান ও তার স্ত্রীসহ কয়েকজনের নামে মামলা করেন। একদিন পর এএসআইয়ের স্ত্রী নুসরাত আরা ময়না অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে ডা. নিশাত আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে কাউন্টার মামলা করেন। তিনি মামলার আসামি হয়েও পুলিশের সহায়তা নিয়ে প্রকাশ্যে সংবাদ সম্মেলন করছেন। অথচ মামলা করার আগে স্বামী-স্ত্রী দুজনই বিএমএতে এসে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছিলেন। তখন তারা নিশাত আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি।’
এদিকে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ফলে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা না পেয়ে আনেক রোগী ফিরে যাচ্ছেন।