গণফোরাম থেকে মন্টু, সাইয়িদসহ ৮ জনকে বহিষ্কার
দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীসহ আট নেতাকে বহিষ্কার করেছে গণফোরাম। আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির এক সভায় এই বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করা হয়।
বহিষ্কৃত অপর নেতারা হলেন অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, মো. হেলাল উদ্দিন, লতিফুল বারী হামিম, খান সিদ্দিকুর রহমান ও আব্দুল হাসিব চৌধুরী। এদের মধ্যে শেষের চারজনকে আগে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল। আজ চূড়ান্ত বহিষ্কার করা হয়। আর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগের বিষয়ে পাঠানো শোকজ নোটিসের জবাব না দেওয়ায় মন্টু, আবু সাইয়িদ, সুব্রত চৌধুরী ও জগলুল হায়দার আফ্রিককে দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গণফোরামের সদস্য মোশতাক আহমদ সভার সিদ্ধান্ত পড়ে শুনান।
এতে বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক বাস্তবতায় সংগঠনকে শক্তিশালী, গতিশীল ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে আগামী ১২ ডিসেম্বর শনিবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জনগণের হারানো গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ভোটাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সংগঠনকে শক্তিশালী করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। দেশব্যাপী গণফোরামকে বিস্তৃত করার জন্য তরুণ, যুবক ও নারীদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, কাজ না করলে সংগঠন হয় না। আপনারা নিজের সংগঠনকে জোরদার করুন, মজবুত করুন। এই কাজে তরুণদের সম্পৃক্ত করুন, সঙ্গে নারীদেরও।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের যে মূল্যবোধ এটা আপনারা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেবেন। মানুষ দেখেছে গণফোরাম সঠিকভাবে কাজ করেছে। শুধু জনসভা নয়, আপনারা গণসংযোগ করতে পারেন আমাদের আদর্শগুলো মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। আমাদের কাজগুলো দেশের মানুষের কাছে যত বিস্তার করা যাবে, তত দেশের কাজ করা হবে। আমাদের কাজ হবে দেশের সার্বিক উন্নতির জন্য। মৌলিক অধিকার যেন মানুষ ভোগ করতে পারে সে বিষয়ে মানুষকে বোঝাতে হবে।
গণফোরামের সভাপতি আরো বলেন, নারী-পুরুষের বৈষম্য না থাকার বিষয়টি শুধু কাগজে-কলমে থাকলে হবে না, তা মানুষের মধ্যে বিস্তার করতে হবে। এতে দেশ, সমাজ ও মানুষ উপকৃত হবে।
সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, আ. ও. ম. শফিক উল্লাহ, মোহসীন রশীদ, মোশতাক আহমেদ, সুরাইয়া বেগম, জানে আলম প্রমুখ।
এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর গণফোরাম ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায়। বেরিয়ে যাওয়া অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টুসহ তিনজন নেতা। এ জন্য আগামী ২৬ ডিসেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ঘোষণা করেছেন। ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের বর্ধিত সভা থেকে কাউন্সিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সেদিন বর্ধিত সভায় উপস্থিত গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ বলেন, ‘বর্ধিত সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সংগঠনকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী ও গণমুখী করার লক্ষ্যে আগামী ২৬ ডিসেম্বর জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় কাউন্সিলকে সফল করার লক্ষ্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টুকে আহ্বায়ক করে ২০১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
বর্ধিত সভায় গণফোরামের কত জেলার প্রতিনিধি আছেন−জানতে চাইলে দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে গণফোরামের ৫২ জেলার ২৮৩ জন প্রতিনিধি উপস্থিত আছেন। বর্ধিত সভায় আরো উপস্থিত গণফোরামের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম প্রমুখ।