গাজীপুরে উদ্ধার অভিযানে গিয়ে এসআইসহ আহত ৩, গ্রেপ্তার ৫

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরের শ্রীপুরে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজন। ছবি : এনটিভি 

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় আটকে রাখা আদম ব্যবসায়ীদের উদ্ধারে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় এসআইসহ তিনজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার এবং লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গুলিসহ ম্যাগজিন উদ্ধার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জেলার শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের রৌশনী (৪০), নাজমুল হকের স্ত্রী মনীষা মনি (২৫), সদর উপজেলার নয়নপুর (দিঘলা) গ্রামের ফরহাদ (১৮), নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লাহোড়া গ্রামের তাজুল ইসলাম (২৪) ও ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ গ্রামের আব্দুর রহমান (২০)।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন ও আহত ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার ‘রাখা ইন্টারন্যাশনাল’এর মার্কেটিং কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন কুমিল্লার আবুল হোসেন রনি। গত ফেব্রুয়ারিতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ইসমাইল হোসেন ও শাহাদত হোসেন নামের দুইজনকে দুবাই পাঠানো জন্য তাদের কাছ থেকে দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা নেন রনি। কিন্তু করোনাকালীন লকডাউনের কারণে ওই দুজনকে বিদেশে পাঠাতে ব্যর্থ হন। এ কারণে ইসমাইল ও শাহাদতের পরিবার তাদের টাকা ফেরত চান। রনি গত এপ্রিলে ইসমাইলের কিছু টাকা ফেরত দেন। অবশিষ্ট টাকা ফেরত দিতে দেরি হওয়ায় তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয় ওই দুজন। আরও লোক পাঠানোর কথা বলে রনিকে শ্রীপুরের নোয়াগাঁও গ্রামের রৌশনীর বাড়িতে আসতে বলেন ইসমাইল।

আহত ব্যবসায়ীরা জানান, আমন্ত্রণ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বন্ধু মো. ফয়সাল আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে রনি সেখানে যান। এ সময় বাড়ির লোকজন রনি ও ফয়সালকে একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করে এবং পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তাদের কাছ থেকে সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। মুক্তিপণের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হলে তারা সহকর্মী ও স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি মীমাংসার জন্য রনির সহকর্মী ফয়সাল, ওমর বেপারী, মো. কালাম ও মাসুম গতকাল শুক্রবার কুমিল্লা থেকে শ্রীপুরের ওই বাড়িতে আসেন। এ সময় মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে তাদেরও আটকে রেখে করে বেধড়ক মারধর করে ইসমাইল ও তাঁর লোকজন। মারধরের একপর্যায়ে মালেক কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। তিনি সহকর্মীদের উদ্ধারের জন্য ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি পুলিশকে জানান।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন আরো জানান, খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে শ্রীপুর থানার এসআই মো. রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় ইসমাইল ও তাঁর লোকজন পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। তারা পুলিশের কাছ থেকে একটি শর্টগান ও পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলিভর্তি একটি ম্যাগজিন ছিনিয়ে নেয়। হামলায় এসআই রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল খোরশেদ আলম ও আনসারের এক সদস্য আহত হন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তিন সদস্য ও পাঁচ ব্যবসায়ীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনায় জড়িত দুই নারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আটককৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গুলিভর্তি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।

আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে ঘটনার মূল আসামি ইমাইলকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) একেএম জহিরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।