গাজীপুরে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষ, নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল
শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মাটিকাটা এলাকায় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করেছে। আজ বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করেছে।
কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মাটিকাটা এলাকার ইনক্রেডিবল ফ্যাশন লিমিটেড নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। বিভিন্ন দাবিতে ওই কারখানার তৃতীয় ও চতুর্থ তলার সুইং সেকশনের শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছিল। শ্রমিকদের কর্মবিরতি কারণে ওই কারখানার ৮৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। আজ সকালে তারা কাজে যোগদান করতে গিয়ে কারখানার মূল ফটকে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের একটি নোটিশ দেখতে পান। সেখানে ৮৫ জনের নাম ও ছবিসহ নোটিশ বোর্ডে তাদের তালিকা দেওয়া হয়। ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয় সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়া শ্রমিকদের ধর্মঘটের ফলে কারখানার তৃতীয় ও চতুর্থ তলার সুইং সেকশন মারাত্মকভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। যার কারণে শ্রম আইনে মোতাবেক কারখানার ওই দুটি সেকশন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া কারখানা খোলার অনুকূল পরিবেশ হলে নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়। আজ সকালে কারখানার সামনে এমন নোটিশ দেখতে পেয়ে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে যায় এবং বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা কারখানার সামনে ভাঙচুর শুরু করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে। এ সময় শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকলে পুলিশ টিয়ারশেল রাবার বুলেট ও লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার শ্রমিক জানান, গত কয়েকদিন আগে কোনো কারণ ছাড়াই কারখানার একজন ইনচার্জকে কর্তৃপক্ষ চাকরিচ্যুত করে। কেন তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বিষয়টি জানতে শ্রমিকরা আন্দোলন করে। আন্দোলনের কারণেই ৮৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়। ছাঁটাই করা শ্রমিকদের ফিরিয়ে নেওয়া না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো. বদরুজ্জামান বলেন, ‘আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা চলছে।’
শিল্প পুলিশের পরিদর্শক ফরহাদ আব্বাস জানান, ওই প্রতিষ্ঠানের দুটি সেকশন বন্ধ করে দেওয়ায় শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আন্দোলন শুরু করে। এ সময় শ্রমিকেরা ইটপাটকেল ছুড়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে আহত করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৯ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।