গাড়ি ছিনতাইকারী চক্রের ৪ সদস্য আটক
লক্ষ্মীপুরে ছিনতাইকারী চক্রের চার সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ বুধবার (২২ মার্চ) বিকেলে পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফ তাঁর নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
ছিনতাইকারী চক্রের এ চার সদস্য হলেন মো. হানিফ, মো. ফারুক, মো. সাগর ও বেলাল হোসেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া পিকআপ ভ্যানের ইঞ্জিন উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি জানান পিকআপ ভ্যানের অন্যান্য অংশ বিক্রি করে দেওয়ায় পুরো গাড়িটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
আটক ফারুক ও হানিফের বাড়ি কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা এলাকায়। সাগরের বাড়ি চান্দিনা এলাকায় আর বেলালের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট গ্রামে।
পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, গত ২৩ জানুয়ারি কুমিল্লার লাকসাম থেকে লক্ষ্মীপুরের আল মাহমুদ ইউসুফ নামে এক ব্যক্তির পিকআপ (চট্ট-মেট্রো-ন-১১-৬৩৬৮) ছিনতাই হয়। নিখোঁজ হন গাড়িচালক সুবল। পরের দিন কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকা থেকে চালককে স্থানীয়রা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে। ছিনতাইকালে চালকের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
পরবর্তী সময়ে গাড়ির মালিক ইউছুফ বিষয়টি জেলা পুলিশকে জানান। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এদিকে দায়িত্ব পেয়ে ডিবি পুলিশ প্রযুক্তির মাধ্যমে পিকআপ ভাড়াকারী অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির কল রেকর্ডিং পর্যালোচনা করে কুমিল্লা শহর থেকে হানিফকে আটক করে। হানিফই ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি ছিলেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কুমিল্লা থেকেই ফারুক ও সাগরকে আটক করা হয়। ফারুকের কাছে গাড়িচালক সুবলের মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়। এরপর তাঁদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী বেলালকে আটক করা হয়।
তাঁরা ডিবি পুলিশকে জানান, গাড়িটি কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় খোরশেদ আলম নামে এক ব্যক্তির গ্যারেজে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন। তিনি গাড়ির ইঞ্জিন রেখে অন্য অংশগুলো খুলে বিক্রি করে দিয়েছেন। পরে গ্যারেজ থেকে ইঞ্জিনটি উদ্ধার করা হয়। কিন্তু পুরো গাড়ি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গাড়ির মালিক ইউছুফ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের মন্তাজ মিয়ার ছেলে।
গাড়িচালক সুবল হোসেনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মুন্সিরহাট এলাকা থেকে চার হাজার টাকা ভাড়ায় কুমিল্লায় খড় নিয়ে যান তিনি। দুপুরে লালমাই এলাকায় একটি হোটেলে খাবার খেতে বসেন। খাওয়ার পর থেকে তাঁর আর কিছু মনে নেই।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।’