গোপালগঞ্জে গাছচাপায় দুইজনের প্রাণহানি

Looks like you've blocked notifications!
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ি। ছবি : সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল-এর আঘাতে দুইজনের প্রাণহানি ঘটেছে। আজ রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর ও কোটালীপাড়া উপজেলায় এক নারীসহ দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

নিহতরা হলেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার খাটিয়াগড় গ্রামের মাজু বিবি (৬৭) ও  কোটালীপাড়া উপজেলার বান্ধাবাড়ি গ্রামের সেকেল হাওলাদার (৭০)। দুইজনই গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা যান।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম মাহফুজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল-এর সময় কোটালীপাড়ায় বান্ধাবাড়িতে সেকেল হাওলাদার নামে এক বৃদ্ধ গাছচাপা পড়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ উপজেলায় শতাধিক ঘরবাড়ি, পোল্ট্রি খামার বিধ্বস্ত হয়েছে। হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। মৌসুমী ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয়ে কাজ করছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিক সহযোগিতা করব।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাদিকুর রহমান খান বলেন, রান্নার সময় রান্নাঘরে উপর গাছ পড়ে মাজু বিবি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ঝড়ে সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে।

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে কোটালীপাড়ায় বুলবুল-এর তাণ্ডব শুরু হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় বয়ে চলে। এ সময় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা বলেন, আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৩০টির মতো ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া শত শত গাছ  উপড়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। আমি এলাকার লোকজন নিয়ে সড়কগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করার জন্য চেষ্টা করছি।

কুরপালা গ্রামের দিনমজুর আকলিমা বেগম, জামিল হাওলাদার, ফিরোজ হাওলাদার, রুহুল সিকদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে আমাদের বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। আমাদের এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে।

মাঝবাড়ি গ্রামের পোল্ট্রি খামারী ইমরান দাড়িয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে আমার মুরগির খামারটি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ধারদেনা করে আমি এই খামারটি করেছিলাম। আমার খামারে ছয় হাজার মুরগি ছিল। খামারের অনেক মুরগি মারা গেছে। আমার দুই লক্ষাধিক টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে যদি কোনো সহযোগিতা না পাই তাহলে আমার পথে বসতে হবে।

বুলবুল-এর আঘাতে গোপালগঞ্জ শহরসহ জেলার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়কে গাছ ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ভোর থেকে সবখানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রায় সব ধরনের ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন স্থানে কিছু কাঁচা ঘরবাড়িও বিধ্বস্ত হয়।

বুলবুল-এর দাপট খানিকটা কমে যাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লোকজন মাঠে নামেন। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে শহরে বিদ্যুৎ সচল হয়।