ঘাটে-পথে ভিড় আর ভিড়

Looks like you've blocked notifications!

রাস্তায় যানবাহন না থাকলেও পোশাক কারখানাগুলোতে ছুটি শেষ হওয়ায় রাজধানীর দিকে ছুটছে পোশাক শ্রমিকরা। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী এবং দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে শনিবার সারা দিনই ভিড় করে তারা।

করোনাভাইরাইসের বিস্তার রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এই ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হলেও পোশাক কারখানাগুলো থেকে কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান পেয়ে ঢাকার পথে পা বাড়িয়েছে বলে জানাচ্ছে শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা বলছে, করোনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও সব কারখানা বন্ধ রাখা হয়নি। তাদের গত মাসের বেতনও দেওয়া হয়নি। রোববার কাজে যোগ না দিলে বেতন পাবে না। বাধ্য হয়ে জীবিকার তাগিদে তারা কর্মস্থলে ছুটছে। করোনার সংক্রমণ ঘটতে পারে জেনেও তারা নিরূপায় হয়ে কর্মস্থলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।

যেসব কারখানার পিপিইসহ করোনা প্রতিরোধের বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করছে সেগুলো, করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত ছুটির সময়েও চালু ছিল। তবে এসব কারখানা বন্ধ রাখতেই হবে এমন কোনো নির্দেশনাও ছিল না।

এ ব্যাপারে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায় এনটিভিকে বলেন, ‘ক্রয়াদেশ থাকলে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রাখতে পারবে যেকোনো পোশাক কারখানা।’

তবে বেশিরভাগই এই সাধারণ ছুটির সময়ে বন্ধ ছিল, কাল চালু হচ্ছে অনেকগুলো।

পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের প্রতিষ্ঠান বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে পোশাক খাতের শিল্পকারখানাগুলো খোলা রাখারই নির্দেশনা ছিল। বিকেএমইএ ও বিজিএমইএর অবস্থানও শুরু থেকে এমনই ছিল। আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার তা কিন্তু আমরা নিয়েছি।’

শ্রমিকদের ঢাকা অভিমুখে যাত্রা

এদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে কোনো যানবাহন না চলায় চরম দুর্ভোগে পড়ে শ্রমিকরা। সড়কে যাত্রীবাহী বাস না থাকায় তিনগুণ ভাড়া দিয়ে ছোট ছোট যানে কর্মস্থলে আসার চেষ্টা করছে তারা। আবার অনেকে গাড়ি না পেয়ে মাইলের পর মাইল হেঁটে রওনা দিয়েছে।

এদিন দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ঘাটে ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষের ঢল দেখা গেছে। করোনা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় তারা খোলা পিকআপ, পণ্যবাহী ট্রাক ও রিকশাভ্যানে চেপে গাদাগাদি করে ঢাকায় ফিরছে। আবার অনেকে দল বেঁধে হেঁটে রওনা দিচ্ছে ঢাকার পথে। জীবিকার প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে এরা। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছে অনেকে।

ঘাটে থাকা প্রশাসনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে প্রচার-প্রচারণাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হলেও ঠেকানো যাচ্ছে না মানুষের স্রোত। কোনো বাধাই মানছে না কর্মস্থলমুখী লোকজন।

এদিকে পোশাক খাতের নির্ধারিত ছুটি শেষ হওয়ায় রাঙামাটি থেকে পোশাক শ্রমিকরা চট্টগ্রামের কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।

অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে যাত্রীরা ফেরিতে গাদাগাদি করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ এই চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এই নৌরুটে জরুরি গাড়ি ছাড়া পারাপার বন্ধ থাকলেও যাত্রী বহন করছে ফেরিগুলো। আজ শনিবার সকাল থেকে এমন চিত্র শিমুলিয়া ঘাটে।

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে পাঁচটি ফেরি চলাচল করছে বলে জানান ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহম্মেদ।