ঘাট ‘কেড়ে নেওয়ায়’ সাম্পানওয়ালাদের অনশন, মিছিল
চট্টগ্রামের পেশাদার মাঝিকে ঘাট ইজারা না দেওয়ার প্রতিবাদে কর্ণফুলী নদীতে সাম্পান মিছিল ও অনশনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে মাঝিরা। আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনব্যাপী এসব কর্মসূচি পালন করে তারা। এতে আটটি সংগঠনের প্রায় তিন শতাধিক মাঝি অংশ নেয়।
সভায় কর্ণফুলী নদীর মাঝি কল্যাণ সমিতির সভাপতি এস এম পেয়ার আলী, সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলিউর রহমানসহ পেশাজীবী নেতারা বক্তব্য দেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০০৩ সালের ‘পাটনিজীবী নীতিমালা’র তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে মাঝিদের ঘাটছাড়া করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রকৃত মাঝিদের বাদ দিয়ে ব্যবসায়ীদের ঘাট ইজারা দিচ্ছে। এতে প্রকৃত মাঝিরা পেশাবদল করতে বাধ্য হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় নির্দেশ সত্ত্বেও জন্মগত পেশাদার পাটনিজীবী (সাম্পান মাঝি) সমিতিকে ঘাট ইজারা দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদেই এ অনশন কর্মসূচি। এ কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সব সাম্পানঘাট বন্ধ রয়েছে বলে জানান কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এস এম পেয়ার আলী।
এস এম পেয়ার আলী জানান, গত পহেলা বৈশাখ পেশাগত সাম্পান মাঝিদের (পাটনিজীবী) কাছ থেকে ঘাট কেড়ে নিয়ে ব্যবসায়ীদের ইজারা দেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম। ঘাটহারা মাঝিরা অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করে। এ অভিযোগে গত ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রশাসন-২ শাখায় পাঠানো চিঠিতে উপসচিব মোহাম্মদ ফজলে আজিম পেশাদার জন্মগত পাটনিজীবী সমিতিকে ঘাট ইজারা দেওয়ার জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিন ঘাট মাঝিদের ইজারা দেওয়ার অনুরোধ জানালেও প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এ বিষয়ে পুনরায় আইনি মতামতের জন্য নির্দেশনাটি চসিক আইন কর্মকর্তার কাছে পাঠান। এরপর গত ছয় মাসেও মাঝিদের ঘাট ফিরিয়ে দেয়নি চসিক।
সভাপতি এস এম পেয়ার আলী আরো জানান, করোনার কারণে সাম্পান মাঝিরা এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। তার ওপর নিজেদের ঘাট হারিয়ে এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে হাজারো সাম্পান মাঝি। অনেকে তিন পুরুষের এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে কর্ণফুলী থেকে সাম্পান চিরতরে হারিয়ে যাবে।