চট্টগ্রামে এএসআইর বিরুদ্ধে দোকান কর্মচারীকে হত্যার অভিযোগ
চট্টগ্রামের টেরিবাজারে এক দোকান কর্মচারীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় আটক করে কোতোয়ালি থানার বক্সিরহাট পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়ার পর ওই দোকান কর্মচারীর মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, চুরির অভিযোগে আটক হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন তিনি। ফাঁড়ি থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় টেরিবাজারের প্রার্থনা বস্ত্রালয় কাপড়ের দোকানের কর্মচারী গিরিধারী চৌধুরীর (৬০)।
দোকান মালিক ও অন্য কর্মচারীরা জানান, সন্ধ্যায় দোকান খুলে পূর্বপরিচিত এক ক্রেতার কাছে মালামাল বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। বিক্রীত কাপড়গুলো ভ্যানে তোলার সময় বক্সিরহাট পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই কামরুল হাসান তাঁকে বেধড়ক পিটিয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে তাঁকে আবার চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই মারা যান গিরিধারী চৌধুরী। পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তবে পুলিশ বলছে, বন্ধ মার্কেট থেকে মালামাল চুরির সময় আটক করে ফাঁড়িতে নেওয়া হয়েছিল গিরিধারী চৌধুরীকে। সেখানে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে মারা যান তিনি। তবু অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তারা।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসিন জানান, চোর সন্দেহে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। তিনি আগ থেকে অসুস্থ ছিলেন। হার্ট অ্যাটাক করে নাকি অন্য কোনোভাবে মারা গেছেন সেটি তদন্ত করছে পুলিশ।
এদিকে গিরিধারী চৌধুরী নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন টেরিবাজার এলাকার মানুষ। সেখানে অভিযুক্ত এএসআই কামরুলের বিরুদ্ধে এর আগেও এলাকাবাসীকে হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন তারা।
দোকান কর্মচারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আবদুর রউফের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া বক্সিরহাট পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই কামরুল হাসান ও দুই কনস্টেবলসহ তিনজনকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।