চট্টগ্রামে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ বিএনপির, ভোট স্থগিতের দাবি
চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে কেন্দ্র দখল, ভোটদানে বাধা ও হামলার অভিযোগ এনেছে বিএনপি। ধানের শীষের প্রার্থী মো. আবু সুফিয়ান এ জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি ভোট স্থগিত করে পুনর্নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছেন।
আজ সোমবার দুপুর দেড়টায় বিএনপি প্রার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, তবে এখনই তিনি নির্বাচন বর্জন করছেন না। কেন্দ্রসহ আরো কিছু জায়গায় দায়িত্বশীলদের সঙ্গে কথা বলে কিছু পরে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
আজ সকাল ৯টা থেকে এই আসনের উপনির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট শেষ হওয়ার কথা বিকেল ৫টায়। ভোট শুরুর মাঝপথে এসে গণমাধ্যমের কাছে নির্বাচনের অনিয়মের কথা তুলে ধরেন আবু সুফিয়ান। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ দেয় বিএনপি।
সরকার-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে বেশিরভাগ কেন্দ্র দখল, ভোটদানে বাধা ও হামলার অভিযোগ এনে বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থক নেতাকর্মীরা ১৭০টির মধ্যে ১২০টি কেন্দ্র সম্পূর্ণ দখল করে আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। একই সঙ্গে অনেক ভোটারের আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর ভোট প্রয়োগ করতে দেওয়া হয়নি।’
এ ছাড়া বিচ্ছিন্ন হামলায় দুপুর পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন সুফিয়ান।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই প্রার্থী আরো বলেন, ‘ভোটের ভয়াবহ পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছি, এই নির্বাচন স্থগিত ও পুনর্নির্বাচন করার জন্য। উনারা (রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়) এখনো রেসপন্স করেননি।’
‘আমরা এখনো নির্বাচন বর্জন করিনি। আমরা এখনো আছি। আমরা আরেকটু বিচার-বিবেচনা করব, কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলব, কিছুক্ষণ পরে জানাব। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আমরা নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছি। আরেকটু পরে এলাকার যাঁরা দায়িত্বশীল আছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে (বর্জনের ব্যাপারে) জানাব,’ যোগ করেন সুফিয়ান।
জাসদ নেতা মইনউদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুতে এই আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, বিএনপির মো. আবু সুফিয়ান, বিএনএফ থেকে এস এম আবুল কালাম আজাদ, ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের সৈয়দ মো. ফরিদ উদ্দিন, ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এমদাদুল হক।
চট্টগ্রাম-৮ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৭৪ হাজার ৪৮৫ জন। নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকে বড় ধরনের কোনো সহিংসতার ঘটেনি।
জেলা নির্বাচনী অফিসের কর্মকর্তারা জানান, প্রিসাইডিং অফিসারের নেতৃত্বে কর্মকর্তারা গতকাল রোববার বিকেলেই নির্বাচনী সামগ্রী নিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে যান। কেন্দ্রে ইভিএম পরিচালনায় কারিগরি সহযোগিতা করবেন সেনাসদস্যরা। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে চার থেকে পাঁচজন পুলিশ ও ১১ আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছে।
মোতায়েন করা হয়েছে পাঁচ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ছয় প্লাটুন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ ছাড়া ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিজিবির সঙ্গে মোবাইল টিমে রয়েছেন।