চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রমিক সংকট, কারখানায় সংকট কাঁচামালের

Looks like you've blocked notifications!
শ্রমিক সংকটে মুখে থুবড়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। ছবি : এনটিভি

চট্টগ্রাম বন্দরের পাশাপাশি দেশের আমদানি ও রপ্তানি কাজে নিয়োজিত বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোগুলো জনবল সংকটে পড়েছে। এতে থমকে যেতে বসেছে রপ্তানি কার্যক্রম। পাশাপাশি শ্রমিক সংকটের কারণে গুদাম থেকে শিল্পের কাঁচামাল বের করতে না পারায় সংকট তৈরি হয়েছে বিভিন্ন শিল্প-কারখানায়।

টানা সরকারি ছুটির মধ্যেও থেমে নেই চট্টগ্রাম বন্দর কার্যক্রম। নিয়মিত চলাচল করছে আমদানি ও রপ্তানির পণ্যবাহী জাহাজ। বন্দরের এই কাজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১৯টি বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনাল। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ৯২ শতাংশ রপ্তানি পণ্য এসব ডিপোর মাধ্যমে যায় চট্টগ্রাম বন্দরে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেলযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হচ্ছে পণ্যবাহী কন্টেইনার।

বেসরকারি টার্মিনালগুলোর মালিক সমিতির মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার জানিয়েছেন, গত শুক্রবার এক হাজার ৭৫০টি গাড়ি রপ্তানি পণ্য নিতে এসেছে। শ্রমিক না থাকায় পণ্য তুলে দেওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ আতঙ্কে ডিপোগুলোতে ৫০ ভাগ কর্মী কর্মস্থলে আসছে না। অনুপস্থিতির এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে রপ্তানির কাজ মুখ থুবড়ে পড়বে। এ আশঙ্কা করে রপ্তানিকারকদের প্রতি ডিপো মালিকরা অনুরোধ জানিয়েছেন যে খুব জরুরি না হলে এ মুহূর্তে পণ্য পাঠানো যেন না হয়।

এদিকে, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদনকারী বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হলেও শ্রমিক সংকটে পণ্য আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না। নগরীর শতাধিক গুদামে মজুদ করে রাখা আমদানি করা শিল্পপণ্য বের করতে না পারায় যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে বন্দর নগরীসহ দেশের বেশিরবাগ কারখানা। ফলে খাদ্য উৎপাদনে বড় ধরনের সংকটে পড়তে পারে বিভিন্ন শিল্পকারখানা।

চট্টগ্রাম বন্দর ও আশপাশে শতাধিক গুদামের শ্রমিক নিয়ন্ত্রণকারী মাঝি আবদুল মালেক জানান, তাঁর নিয়ন্ত্রণে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক গুদামে শত কোটি টাকার পণ্যের কাঁচামাল মজুদ আছে। কিন্তু শ্রমিক না থাকায় ব্যবসায়ীরা গুদাম থেকে এসব পণ্য বের করতে পারছে না।

করোনার কারণে গুদাম এলাকায় অবস্থিত খাবারের দোকান বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ শ্রমিক এলাকায় চলে গেছে বলে জানান মান্নান মাঝি।

চট্টগ্রামের নিত্যপণ্য উৎপাদনকারী এসএ গ্রুপের সিনিয়র ডিজিএম মো. দিদারুল আলম জানান, তাদের কোম্পানিতে আটা, ময়দা, লবণ, সয়াবিন তেল, সুজি, কনডেন্স মিল্ক উৎপাদন করা হয়। এ করোনার মধ্যেও কারখানাগুলো চালু রাখা হয়েছে। কিন্তু খাতুনগঞ্জ থেকে ডিও হাতে থাকার পরও শ্রমিক সংকটের কারণে গুদাম থেকে পণ্য ছাড় করতে পারছি না। যদিও আমরা কারখানার শ্রমিকদের জন্য দুইবেলা খাবার নিশ্চিত করেছি। পাশাপাশি কর্মীদের বাসা থেকে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে অফিসের গাড়ি ব্যবহার করছি। কিন্তু কারখানায় পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামাল সংকট আরো ঘনীভূত হলে উৎপাদন কত দিন স্বাভাবিক রাখা যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ কারখানার মালিকদের।

চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ফখরুল আলম জানান, সরকারি ছুটিতেও কাস্টমসের কার্যক্রম চলবে। ১০ দিনের জন্য আলাদাভাবে ১০টি কাজ করছে। বন্দর ও কাস্টমস সংশ্লিষ্টরা সহযোগিতা করলে কোনো সমস্যা হবে না। দেশের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে চট্টগ্রাম বন্দর শ্রমিক ও বন্দরে যাতায়াতকারী যানবাহন ট্রাক, কার্ভাডভ্যান, লরি, প্রাইমমুভার চলঅচলে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছে।