চলন্ত বাসে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’ : পাঁচ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ
সাভারের আশুলিয়ায় চলন্ত বাসে এক তরুণীকে (২২) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। প্রথম দিন তাঁদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
এর আগে পুলিশ আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে গতকাল শনিবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাদী তাহমিদা তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর আসামিদের আশুলিয়া থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এ ঘটনায় বাসচালক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় তাঁকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কারাগারে পাঠানো হয়।
জবানবন্দি দেওয়া আসামি হলো বগুড়ার ধুনট উপজেলার খাটিয়ামারি এলাকার সুমন মিয়া (২৪)। এ ছাড়া রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলো ঢাকার তুরাগ থানার গুলবাগ ইন্দ্রপুর ভাসমান গ্রামের মো. আরিয়ান (১৮), কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনা এলাকার সাজু (২০), একই এলাকার সোহাগ (২৫), বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর গ্রামের সাইফুল ইসলাম (৪০) এবং নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার ধামঘর এলাকার মনোয়ার (২৪)।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি জানান, আসামিদের দেওয়া তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অতীতে তাঁরা কোথায় কী করেছেন, সেসব বিষয়েও খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আসামিরা সবাই আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল-নবীনগর মহাসড়কের পরিবহণ শ্রমিক। অপরদিকে ভুক্তভোগী নারী নারায়ণগঞ্জে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তিনি সেখানেই স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে থাকেন। তাঁর স্বামীর বাড়ি লালমনিরহাটে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তরুণীর বোন মানিকগঞ্জে বসবাস করেন। তিনি গত শুক্রবার ছোটভাইকে নিয়ে বোনের বাসায় মানিকগঞ্জে বেড়াতে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে নারায়ণগঞ্জে নিজের বাসায় ফেরার জন্য তিনি একটি বাসে ওঠেন।
রাত ৮টার দিকে ওই তরুণী ও তাঁর ভাইকে আশুলিয়ার নবীনগর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তিনি অন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে নিউ গ্রামবাংলা পরিবহণের চালকের সহকারী মনোয়ার ও সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম এসে তাদের জানান, মিনিবাসটি টঙ্গী স্টেশন রোড পর্যন্ত যাবে। জনপ্রতি ভাড়া হবে ৩৫ টাকা। এরপর ওই তরুণী মিনিবাসে ওঠেন এবং গন্তব্যের আগেই বাসের অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর চালক বাসটি নিয়ে আবার নবীনগরের দিকে রওনা হন। এ সময় বাসের জানালা ও দরজা আটকে বাসের চালক ও সহকারীসহ ছয়জন মিলে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। পরে টহল পুলিশ বাসটি থামিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে।
এরপর অভিযুক্ত ছয়জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার সকালে ভুক্তভোগী তরুণী ওই ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। এরপর ভুক্তভোগী তরুণীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।