চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনায় দুই মাস মাছ ধরা নিষিদ্ধ
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাটকা রক্ষায় ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় সব ধরনের মাছ আহরণ, কেনাবেচা, মজুত ও পরিবহণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময় জেলার মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ৭০ কিলোমিটার এলাকার নিবন্ধিত ৪৪ হাজার ৩৫ জন জেলে মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকবে। এজন্য জেলেদের সরকার জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রত্যেক মাসে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৪০ কেজি করে চাল দেবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জাটকা রক্ষায় পদ্মা ও মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় ইতোমধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু হয়েছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে। জনবহুল এলাকা ও মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে মৎস্য বিভাগ থেকে ব্যানার ও পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ১ মার্চ সকালে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন তিন নদীর মোহনা মোলহেড থেকে সচেতনতামূলক নৌ-র্যালি বের হবে।
তরপুরচণ্ডী আনন্দবাজার এলাকার জেলে জাহাঙ্গীর দর্জি জানান, সরকার নিষেধাজ্ঞা দিলে তিনি মাছ ধরতে নদীতে নামেন না।
একই এলাকার জেলে মো. হোসেন ফকির নামের অপর জেলে জানান, তার পরিবারের সদস্য সাতজন। সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৪০ কেজি করে চাল দেয়। তা দিয়ে তাদের সংসার চলে না। কারণ এ সময় মাছ ধরতে না পারায় তারা বেকার হয়ে পড়েন।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক দেওয়ান বলেন, ‘আমরা বহু বছর ইলিশ আহরণ কাজে জড়িত। আমার অভিজ্ঞতা বলছে, জেলা টাস্কফোর্সের অভিযানগুলো প্রত্যেক সংস্থার আলাদা হওয়া প্রয়োজন। কারণ নৌ-পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য জেলেদেকে জাটকা ধরার সুযোগ করে দেয়। এসব বিষয়গুলো আমি প্রশাসনকে বেশ কয়েকবার জানিয়েছি।’
নৌ-পুলিশের ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘জাটকা নিধন বন্ধ করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবার মার্চ-এপ্রিলে জাটকা রক্ষায় ৭০টি স্পিডবোটে দেড় হাজার পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করবে।’
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, ‘সারা বিশ্বে ইলিশ উৎপাদনে প্রথম বাংলাদেশ। ইলিশ দিয়ে আমাদের দেশ বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। এই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের প্রথমেই জাটকা রক্ষা করতে হবে। এজন্য আমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। অভয়াশ্রম এলাকায় আমাদের জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স দিন ও রাত কাজ করবে। ইতোমধ্যে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য জেলেদের মধ্যে খাদ্য সহায়তা বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি, জেলেরা জাটকা আহরণ থেকে বিরত থাকবে।’