চারদিকে থৈ থৈ পানি, পাঁচদিন ধরে বাক্সবন্দি মরদেহ
সুনামগঞ্জের এবারের বন্যা কতটা বিপজ্জনক তা ইব্রাহিম মিয়ার থেকে আর কেউ ভালো জানেন না! তাঁর বাবা আশরাফ আলী মারা গেছেন গত শুক্রবার রাত ১২টায়। কবরস্থান ডুবে থাকায় পাঁচদিন ধরে মরদেহ পড়ে আছে। দাফন করার জায়গা নেই!
জেলার সর্বত্র বন্যার পানি থাকায় নিজের বাবার লাশ দাফন করতে পারেননি ইব্রাহিম মিয়া। বন্যার সময় সাধারণত মরদেহ দাফন করতে না পারলে পানিতে বাসিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু নিজের বাবার লাশ বন্যার পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার সাহস হয়নি তার। আর তাই পলিথিন মুড়িয়ে বাক্সবন্দি করে বাঁশের উপর বেঁধে রেখেছেন বাবার মরদেহ।
এমন নির্মম ও হৃদয়বিদারক ঘটনা সুনামগঞ্জ শহরতলীর ইব্রাহিমপুরে। একই জায়গাতে আরও একটি মরদেহ পড়ে আছে। এমন চিত্র সারা জেলায়ই।
আশরাফ আলী ছেলে ইব্রাহিম মিয়া ও এলাকাবাসী জানায়, বন্যার সময় কবরস্থান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মরদেহ দাফন করা যায় না। তাই হাওর এলাকার কবরস্থানগুলো উঁচু করার উদ্যোগ নেওয়া খুব জরুরি। সারা সুনামগঞ্জ জেলা ছয় দিন ধরে ডুবে আছে থৈথৈ পানির নিচে। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার এমনকি উঁচু কবরস্থানও পানির নিচে ডুবে আছে। পা ফেলার এতটুকু শুকনো জায়গা নেই। মানুষের বাড়িঘরে গলা পর্যন্ত পানি।
সুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, কবরস্থানের পাশে মরদেহ দাফন না করে ফেলে রাখা হয়েছে। এটা খুবই অমানবিক। আর এখন লাশ পঁচে গন্ধ বের হচ্ছে। এতে মানুষ অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার উদ্যোগ নিয়ে কবরস্থানগুলো উঁচু করলে বর্ষায় মরদেহ দাফন করা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে না।