চাল চুরির দায়ে আরো ১২ চেয়ারম্যান-সদস্য বরখাস্ত
চাল আত্মসাৎ ও ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে আরো ১২ জন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে তিনজন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও নয়জন ইউপি সদস্য।
আজ রোববার মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এর আাগে গত ১২ এপ্রিল তিনজন ও ১৫ এপ্রিল নয়জন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত মোট ২৪ জন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
আজ সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ইউপি চেয়ারম্যান হলেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউপির মখদুম কবীর তন্ময়, নাটোরের লালপুর উপজেলার অর্জুনপুর বরমহাটি ইউপির মো. আবদুস সাত্তার ও বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মাঝিহট্ট ইউপির মির্জা গোলাম হাফিজ সোহাগ।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার ইউপি সদস্যরা হলেন নাটোরের লালপুর উপজেলার অর্জুনপুর-বড়মহাটি ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রেজা, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাকির হোসেন ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রোকনুজ্জামান, ভোলার মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউপির ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আব্দুর রব পাটোয়ারী, নড়াইলের কালিয়া উপজেলার জয়নগর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ মোশারেফ হোসেন এবং ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য রনি বেগম, সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার খাসকাউলিয়া ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আল-আমিন চৌধুরী এবং ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য মোছা. আছিয়া খাতুন।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকার কর্তৃক প্রদত্ত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ, ভিজিডির চাল আত্মসাৎ, খাদ্য সহায়তা চাইতে আসা লোকজনকে মারধর, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে দেশের সংকটময় মুহূর্তে এলাকায় অনুপস্থিত থাকা, উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় অনুপস্থিত ইত্যাদি কারণে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাদের কেউ কেউ এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে জেলহাজতে আছেন এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
উল্লেখিত চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ কর্তৃক সংঘটিত অপরাধ মূলক কার্যক্রম জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী তাদের স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
একইসময় পৃথক পৃথক কারণ দর্শানো নোটিশে কেন তাদের চূড়ান্তভাবে নিজ পদ থেকে অপসারণ করা হবে না তার জবাব পত্রপ্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এর আগে ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দেন এবং এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়।
আজ এক বার্তায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম করা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে বর্তমানে অনিয়মের ঘটনা কম পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।