চিকিৎসকদের বিরক্ত করলে গ্রেপ্তার : পুলিশ
করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) শঙ্কিত ও স্তম্ভিত গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। করোনা আতঙ্কে দেশে কার্যত লকডাউন অবস্থা বিরাজমান। সরকারের পক্ষ থেকে দেশের সব নাগরিককে ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি।
এই যখন পরিস্থিতি তখন সাধারণ নাগরিক যেন তাঁর প্রাপ্য চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হন সেজন্য মুঠোফোনের মাধ্যমে অনেক চিকিৎসকই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু জনসাধারণের কল্যাণে নিয়োজিত এসব চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে কখনো-কখনো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। হতে হচ্ছে বিরক্ত। কারণ, কিছু দুষ্ট লোক বিনা প্রয়োজনে অহেতুক ফোন করে এসব চিকিৎসকদের বিরক্ত করছেন। এতে করে সাধারণ মানুষ তাঁর প্রাপ্য চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে সাধারণের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ওই দুষ্ট লোকদের ক্ষেত্রে কঠোর হচ্ছে পুলিশ। চিকিৎসকদের বিরক্ত করার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ইমেইলে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা এসব কথা বলেন।
ভিডিও বার্তায় সোহেল রানা বলেন, ‘করোনার উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ যেন ঘরে বসেই চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সম্মানিত চিকিৎসক এবং স্বাস্থকর্মী যাঁরা রয়েছেন তাঁরা মুঠোফোনের মাধ্যমে রোগীর কথা শুনে চিকিৎসা দিচ্ছেন। কিন্তু যেসব নম্বর ব্যবহার করে তাঁরা এই সেবা দিচ্ছেন সেই মোবাইল নম্বরগুলোতে কিছু দুষ্ট লোক বিনা প্রয়োজনে অহেতুক ফোন করে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদেরকে বিরক্ত করছেন। এর ফলে একদিকে যেমন চিকিৎসকরা বিরক্ত হচ্ছেন এবং তাঁদের কাজও বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। অন্যদিকে, তেমনি যার জরুরি চিকিৎসা পরামর্শ নেওয়ার দরকার ছিল এরকম সাধারণ মানুষ তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
সোহেল রানা আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ এই ধরনের উত্ত্যক্তকারীকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। এরইমধ্যে আমরা কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছি। এবং এভাবে যারা বিরক্ত করবেন ক্রমান্বয়ে তাদেরকেও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা আহ্বান জানাতে চাই, এই ধরনের উত্ত্যক্তকারী যারা রয়েছেন, যারা উত্ত্যক্ত করেছেন বা করছেন তারা অবশ্যই এই কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকবেন। অন্যথায় পুলিশ আপনাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
এদিকে আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অধিদপ্তরের ‘স্বাস্থ্য বাতায়ন বা আইইডিসিআরের হটলাইনে’ কল এসেছে এক লাখ দুই হাজার ৮৩৭টি। এসব সেবাতে এ পর্যন্ত মোট কল এসেছে ২৪ লাখ ২৬ হাজার ৮৯৯টি। এ ছাড়া স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য ও চিকিৎসাসেবা প্রদানে হটলাইনে আজ বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন মোট তিন হাজার ৮০৭ জন চিকিৎসক। যারা সাধারণ জনগণকে করোনা সংক্রান্ত চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন।