চিকিৎসক-নার্সদের জন্য ২০ লাখ টাকা দিলেন সেলিম ওসমান

নারায়ণগঞ্জের করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবা আরো জোরদার করতে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয়দের জন্য ২০ লাখ টাকার আর্থিক সহযোগিতা করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। পর্যায়ক্রমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকের জন্যও একইভাবে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেল নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে খানপুর হাসপাতালের চিকিৎসদের জন্য ওই অর্থ দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা ও অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার ইমারন সিদ্দিকির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক শামসুদ্দোহা সঞ্জয়ের কাছে ১০ লাখ টাকা নগদ এবং বাকিটা চেকে দেওয়া হয়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, বিকেএমইএর সহসভাপতি (অর্থ) মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল, পরিচালক জি এম ফারুক, ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আসাদুজ্জানসহ আরো অনেকে।

এ সময় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেন, ‘আমাদের নারায়ণগঞ্জে করোনা আক্রান্ত রোগীদের যাঁরা চিকিৎসা দিবেন তাঁরাই সব থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। এটা শুধু তাদের প্রয়োজনীয় মেডিকেল সামগ্রীর সাপোর্ট না পাওয়ার কারণে হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ চিকিৎসকরাই যদি আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাহলে আমার নারায়ণগঞ্জের মানুষ চিকিৎসার জন্য কার কাছে যাবে? আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় সবকিছুর ব্যবস্থা করার জন্য এই অর্থ দিলাম। যা দিয়ে হাসপাতালের ৬০ জন নার্স এবং ৪০ জন ওয়ার্ড বয় সবার থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে উনারা নিরাপদ থেকে চিকিৎসকদের চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতা করতে পারেন। এর আগে আমরা নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে চিকিৎসকদের এবং নারায়ণগঞ্জ ডাকবাংলায় তাদের সহযোগীদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এভাবে পর্যায়ক্রমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ সময় সংসদ সদস্য নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘চিকিৎসকদের যাতায়াতে এবং নমুন পরীক্ষায় যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনে রিক্যুজিশন করে গাড়ির ব্যবস্থা করতে হবে। তবে সেসব গাড়ির অবশ্যই ভাড়া দিয়ে দিতে হবে। যাতে করে ওই গাড়ি চালকের সংসার চলতে কোনো সমস্যা না হয়। এতে রোগীদের নমুনা পরীক্ষার পর ফলাফলও দ্রুত পাওয়া সম্ভব হবে।’
এ সময় সেলিম ওসমান ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান রেখে বলেন, ‘সরকারি অর্থায়নের পাশাপাশি প্রয়োজনে আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এসেছি। আপনাদের কাছে অনুরোধ এই ক্রান্তিলগ্নে আমার নারায়ণগঞ্জের মানুষদের বাঁচাতে আপনাদের সাধ্যমতো যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।’
এ সময় খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্ববধায়ক ডা. শামসুদ্দোহা সঞ্জয় বলেন, ‘আমাদের জেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য যেভাবে আমাদের চিকিৎসকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সহযোগিতা নিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমরাও কথা আমাদের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে একজন করোনা রোগীও ফেরত যাবে না। যত দিন আমাদের জীবন আছে, আমরা আমাদের সর্বস্ব দিয়ে রোগীদের সেবা করে যাব।’