চিরসবুজ চিত্রনায়ক জাফর ইকবালের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Looks like you've blocked notifications!
প্রয়াত চিত্রনায়ক জাফর ইকবাল। ছবি : সংগৃহীত

চিরসবুজ চিত্রনায়ক জাফর ইকবাল। ১৯৯২ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে আজকের এই দিনে (৮ জানুয়ারি) পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন তিনি। তারুণ্যের প্রতীক এই নায়কের স্মরণে বিএফডিসিতে আয়োজন করা হয়েছে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে এই আয়োজন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান বলেন, ‘আমরা প্রয়াত শিল্পীদের স্মরণ করে প্রতি মাসেই দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে থাকি। আজ আমাদের চিরসবুজ নায়ক জাফর ইকবালের মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁকে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আজ বাদ আসর শিল্পী সমিতিতে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে।’

জায়েদ আরো বলেন, ‘প্রত্যেক শিল্পীর জন্য আলাদাভাবে মিলাদ ও দোয়া পড়ানো সম্ভব নয়, যে কারণে আমরা এই মাসে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের সবার জন্যই আজ এই আয়োজন করেছি।’

১৯৫০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের রোমান্টিক হিরো, সংগীতশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা জাফর ইকবাল। তিনি ছিলেন আশির দশকের বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। তাঁর বড় ভাই আনোয়ার পারভেজ ও ছোট বোন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। এঁরা দুজনই সংগীতশিল্পী।

বাংলা চলচ্চিত্রের স্টাইলিশ নায়কদের অন্যতম জাফর ইকবাল। অভিনয়ের পাশাপাশি বাস্তব জীবনে চমৎকার গান গাইতে পারা এ শিল্পী বেশকিছু ছবিতে গায়ক চরিত্রেও অভিনয় করেছেন।

১৯৮৪ সালে আনোয়ার পারভেজের সুরে রাজ্জাক অভিনীত ‘বদনাম’ ছবিতে জাফরের গাওয়া ‘হয় যদি বদনাম হোক আরো’ জনপ্রিয় গানগুলোর অন্যতম। মূলত তিনি ছিলেন গিটারবাদক। ভালো গিটার বাজাতেন বলে সুরকার আলাউদ্দিন আলী তাঁকে দিয়ে অনেক ছবির আবহসংগীত তৈরি করিয়েছেন। তাঁর সেই ছবিগুলোও বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগে জাফর ইকবাল চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। তাঁর অভিনীত প্রথম ছবির নাম ‘আপন পর’। এ ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন কবরী। জাফর ইকবালের সঙ্গে অভিনেত্রী ববিতা জুটি হয়ে প্রায় ৩০টির মতো ছবি করেন।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন জাফর ইকবাল। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন। ‘সূর্যসংগ্রাম’ ও এর সিক্যুয়াল ‘সূর্যস্বাধীন’ চলচ্চিত্রে ববিতার বিপরীতে অভিনয় করেন। ১৯৭৫ সালে ‘মাস্তান’ চলচ্চিত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় তাঁকে সে প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বকারী নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেয়।

জাফর ইকবাল ১৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার বেশির ভাগই ছিল ব্যবসাসফল। ১৯৮৯ সালে জাফর ইকবাল অভিনীত ত্রিভুজ প্রেমের ছবি ‘অবুঝ হৃদয়’ দারুণ ব্যবসাসফল হয়। এ ছবিতে চম্পা ও ববিতার বিপরীতে তাঁর অভিনয় দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। ববিতার সঙ্গে তাঁর জুটি ছিল দর্শকনন্দিত।

জাফর ইকবাল অভিনীত ‘ভাই বন্ধু’, ‘চোরের বউ’, ‘অবদান’, ‘সাধারণ মেয়ে’, ‘একই অঙ্গে এত রূপ’, ‘ফকির মজনুশাহ’, ‘দিনের পর দিন’, ‘বেদ্বীন’, ‘অংশীদার’, ‘মেঘবিজলী বাদল’, ‘সাত রাজার ধন’, ‘আশীর্বাদ’, ‘অপমান’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘নয়নের আলো’, ‘গৃহলক্ষ্মী’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘প্রেমিক’, ‘নবাব’, ‘প্রতিরোধ’, ‘ফুলের মালা’, ‘সিআইডি’, ‘মর্যাদা’, ‘সন্ধি’ ইত্যাদি চলচ্চিত্র সুপারহিট হয়।