চীন সরকারের দেওয়া দ্বিতীয় ধাপের মেডিকেল সরঞ্জাম ঢাকায়
চীনের কুনমিং থেকে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ১০ হাজার টেস্টিং কিট, ১০ হাজার পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) এবং এক হাজার ইনফ্রারেড থার্মোমিটারসহ মেডিকেল সরঞ্জামের দ্বিতীয় চালানটি দেশে এসে পৌঁছেছে।
চীন সরকারের একটি বিশেষ বিমানে করে কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য চিকিৎসার সরঞ্জাম আনা হয়েছে।
ঢাকা চীনা দূতাবাসের এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, ‘মেডিকেল সরঞ্জাম বহনকারী বিশেষ বিমানটি বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং এবং বাংলাদেশ সরকারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় প্রয়োজনবোধে চীন বন্ধুত্বের সহায়তা এবং মানবজাতির সুষ্ঠু বসবাস গড়ে তোলার প্রতি তার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। দূতাবাস জানায়, ‘আমরা একসাথে আছি।’
গত রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে রসদ সরবরাহের জন্য কাজ করছে।’
‘আমাদের এটি দরকার ... আমাদের পর্যাপ্ত মজুদ থাকা দরকার’ যোগ করে তিনি আরো বলেন, ‘সরকার বেসরকারি কোম্পানিগুলোকেও টেস্টিং কিট এবং অন্যান্য চিকিৎসার রসদ আমদানির অনুমতি দিচ্ছে।’
চীন সম্প্রতি করোনাভাইরাস মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশকে বিপুল টেস্টিং কিটসহ জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করার ঘোষণা দেয়।
বাংলাদেশকে দেওয়া চীনের জরুরি মানবিক সাহায্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ১০ হাজার মানুষের জন্য করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট, ১৫ হাজার সার্জিক্যাল এন ৯৫ মাস্ক, ১০ হাজার সুরক্ষা পোশাক ও এক হাজার ইনফ্রারেড থার্মোমিটার।
এদিকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আলিবাবা গ্রুপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান জ্যাক মার দেওয়া মেডিকেল সরঞ্জাম দুটি বিশেষ বিমানে করে শিগগিরই দেশে আসবে।
প্রথম ফ্লাইটটি ২৮ মার্চ চ্যাংশা থেকে আসবে যাতে ৩০ হাজার করোনাভাইরাস টেস্টিং রিজেন্ট থাকবে।
দ্বিতীয় ফ্লাইটটি একই দিনে নিংবো থেকে যাত্রা করবে এবং এতে তিন লাখ মাস্ক থাকবে যার মধ্যে ৩০ হাজার এন ৯৫ মেডিকেল মাস্ক এবং দুই লাখ ৭০ হাজার একক ব্যবহারের সার্জিকেল মাস্ক রয়েছে।
গতকাল বুধবার চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান ইউএনবিকে জানান, দুটি বিশেষ বিমান হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। এজন্য তাঁরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।
এর আগে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বাংলাদেশসহ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশকে সহায়তা করার ঘোষণা দেন আলিবাবা গ্রুপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান জ্যাক মা। মাস্ক, পরীক্ষার কিট, প্রতিরক্ষামূলক পোশাক, প্লাস ভেন্টিলেটর এবং থার্মোমিটারসহ জরুরি বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ ছাড়াও এ সাহায্য পাবে আফগানিস্তান, কম্বোডিয়া, লাওস, মালদ্বীপ, মঙ্গোলিয়া, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা।
ইতিমধ্যে, বাংলাদেশে স্থানীয় কোম্পানিগুলো পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) এবং মাস্ক উৎপাদন শুরু করেছে। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয় সরকার।