চেক প্রতারণার মামলায় সেই মান্নানের কারাদণ্ড, জরিমানা
খুলনার অ্যাজাক্স জুট মিল কেনার বায়নার প্রায় ২২ কোটি টাকার চেক প্রতারণা মামলায় বাগেরহাটের ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট’-এর আব্দুল মান্নান তালুকদারের তিন বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দ্বিগুণ জরিমানাও করেছেন রংপুর জেলা সেশন জজ আদালত ১-এর বিচারক এস এম আহসানুল হক।
আজ রোববার দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা হয় বলে অ্যাজাক্স জুট মিলের প্রধান নির্বাহী কাওসার জামান বাবলা ও মামলার বাদী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাগেরহাটের আব্দুল মান্নান বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চার বছরে দ্বিগুণ করার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ সংগ্রহ করতেন। ২০১৫ সালের শেষ দিকে তিনি অ্যাজাক্স জুট মিল কিনে নেওয়ার জন্য বায়নাপত্র করেন। এর জন্য তিনি ২১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার তিনটি চেক দেন। চুক্তিতে বলা হয়, এক বছরের মধ্যে সব টাকা পরিশোধ করা হবে।
এরপর ‘নিউ বসুন্ধারা রিয়েল এস্টেট’ অ্যাজাক্স জুট মিল কিনে নিয়েছে এ ধরনের প্রচার চালিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন আব্দুল মান্নান। এই বায়নাপত্রের সূত্র ধরে স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতার আশ্রয়ে তিনি মিলটির দখল নিয়ে নেয়। এবং মিল চালু না করে সেখানে সারের গুদাম তৈরি করেন। কিন্তু নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বায়নার ২১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার চেক নাগদায়ন না হওয়ায় এ্যাজাক্স জুট মিলের প্রধান নির্বাহী কাওসার জামান বাবলা রংপুর আদালতে আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এই মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ রোববার আসামি আব্দুল মান্নান তালুকদারের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে তিনটি চেক প্রতারণায় দায়ে এক বছর করে তিন বছর কারাদণ্ড এবং চেকের দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল হক প্রামাণিক, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট শফি কামাল ও অ্যাডভোকেট আফতাব আহমেদ। আসামিপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন অ্যাডভোকেট রইস উদ্দিন।
‘নিউ বসুন্ধারা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ চার বছরে অর্থ দ্বিগুণ করার প্রলোভন দেখিয়ে খুলনা, বাগেহাটর, পিরোজপুর, সাতক্ষীরার প্রায় ৪০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে দুই হাজার কোটি টাকা তুলে নেন।
এ ব্যাপারে এনটিভির ‘ক্রাইম ওয়াচে’ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচারিত হলে তদন্তে নামে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিষয়টি প্রমাণিত হলে দুদক ১১০ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলা করে ২০১৮ সালের শেষের দিকে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে মান্নান তালুকদার বর্তমানে জেলে রয়েছেন। দুদকসহ একাধিক গ্রাহক তাঁর নামে প্রতারণার মামলা করেছেন।