৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ছাত্রদলের নতুন কমিটি কত দূর?

Looks like you've blocked notifications!

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ শনিবার। ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এ ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠা পরবর্তী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের ভূমিকা ছিল অনন্য।

কিন্তু, ১৯৯০ সালের পরবর্তী ছাত্রদল যেন নিজেদের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে। অতীতের সেই ছাত্রদলকে খুঁজে পাওয়া যায় না রাজনীতির মাঠে। তাই, ছাত্রদলের পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সিলেকশন পদ্ধতি বাদ দিয়ে ইলেকশনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন চালু করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কিন্তু, নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও ভোট বা নতুন কমিটির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বরং মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিতেই চলছে ছাত্রদলের কার্যক্রম।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিলের মাধ্যমে সভাপতি হিসেবে ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলকে নির্বাচিত করা হয়। ওই বছর ২১ ডিসেম্বর সংগঠনের ৬০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করলেও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থ হয়েছেন নেতারা। নির্বাচিত কমিটি তাদের প্রতি দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীদের যে প্রত্যাশা সেটি পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন ছাত্রদলের বিভিন্ন জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।

ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির দুই বছরের মেয়াদ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন বা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোর কমিটি গঠন করতে পারেননি খোকন-শ্যামল। উল্টো দেশের বিভিন্ন জেলা ইউনিটের কমিটি করতে গিয়ে স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে বর্তমান কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে। এমনকি সাংগঠনিক ইউনিটের কমিটির গঠনের পর বর্তমান কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও কেন্দ্র থেকে গঠিত সাংগঠনিক কমিটিগুলোর করে দেওয়া কমিটিও পরিবর্তন করা হয়েছে।

ছাত্রদলে আগামীতে শীর্ষ পদপ্রত্যাশী একাধিক নেতার সঙ্গে কথা হয় এনটিভি অনলাইনের। তাঁরা বলেন, ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত কোনো কমিটি বা সরকার কখনও মেয়াদ শেষ হলে আর ক্ষমতায় থাকতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কিন্তু ছাত্রদলের বর্তমান কমিটি মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ক্ষমতা ধরে রাখছে এবং নতুন কমিটির বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটি নির্ধারিত সময়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করা উত্তম। তবে এটাও ঠিক, একটা ছাত্র সংগঠন আর সরকারের মধ্যে কিছু পার্থক্য থাকে। আর ছাত্র সংগঠন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হলেও পরবর্তী কমিটি গঠন পর্যন্ত দায়িত্বে থাকলে খুব বেশি অসুবিধা নেই।’

ছাত্রদলের সাবেক এই কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত যেকারও নির্ধারিত সময়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে—এটাই গণতন্ত্র। কিন্তু যদি তা না হয়, সেটি মোটেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়৷’

ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহসভাপতি বলেন, ‘ভোট একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, এটা সত্য। নির্ধারিত সময়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করার বিধান আছে সেটাও সত্যি। কিন্তু, ছাত্র সংগঠনের কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। তাই চাইলেই অনেক সময় নির্ধারিত সময়ে দায়িত্ব হস্তান্তর সম্ভব হয় না।’

ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির মেয়াদ, নতুন কমিটি গঠন, ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর দায়িত্বে থাকতে পারে কিনা জানতে বর্তমান কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলকে ফোন ও এসএমএস করা হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।