ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ
শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে ছয় ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ দুই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ওই ছয় ছাত্রী কলেজের অধ্যক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
গোসাইরহাট সরকারি শামসুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কর্তৃপক্ষ
জানায়, গত সোমবার দুপুরের দিকে কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছয় শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস পেরিয়ে ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়ামিন সিকদার ও ছাত্রলীগ নেতা মারুফ রায়হান ছাত্রীদের ঘিরে প্রেমের প্রস্তাবসহ অশালীন মন্তব্য করতে থাকেন। ছাত্রীদের সঙ্গে ওই আচরণ ভিডিও করা হয়। পরে ছাত্রীরা সেখান থেকে যেতে চাইলে তাঁদের ঘিরে রাখা হয়। পরে ওই ছাত্রীরা শিক্ষক মিলনায়তনে আশ্রয় নেন।
বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানানো হলে তিনি লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তাঁদের। পরে ওই ছয় ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিলে অধ্যক্ষ ওই দিনই শিক্ষক পরিষদের জরুরি সভা আহ্বান করেন।
পরের দিন শিক্ষক পরিষদের সভায় এ ঘটনা তদন্ত করার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যদের বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
ঘটনার শিকার প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এখন কলেজে আসতে ভয় পাচ্ছি। আমরা স্কুল ছেড়ে সবেমাত্র কলেজে এসেছি। এ সময় এ রকম পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, ভাবতে পারিনি। অভিযোগ দেওয়ার পর তারা অনবরত আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।’
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করার পর থেকে ইয়ামিন ও মারুফ কলেজে আসছেন না। তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।
গোসাইরহাট সরকারি শামসুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সহকারী অধ্যাপক তদন্ত টিমের প্রধান বিশ্বনাথ দাস বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্যা শোহেব আলী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি বিষয়টির খোঁজখবর নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
সরকারি শামসুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক বলেন, ‘ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই আমি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে ওই ছাত্রদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’