জনগণকে বোকা বানানোর জন্য সার্চ কমিটি : মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। এখন তারা আবার নির্বাচিত হওয়ার জন্যে তাদের মতো করে ইলেকশন কমিশন গঠন করবে। সে জন্য সার্চ কমিটি গঠন করেছে। আইনও তৈরি করেছে। সবই জনগণকে বোকা বানানোর জন্য।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত ‘ফসলের মাঠে কৃষকের আত্মহত্যায় ফ্যাসিবাদী শাসনের নির্মম বাস্তবতার দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি’ শীর্ষক এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল ১০ টাকা কেজিতে চাল খাওয়াবে, বিনা পয়সায় সার দেবে এবং ঘরে ঘরে চাকরি দেবে। মানুষও ভেবেছিলেন একটা পরিবর্তন আসবে। তাই সেদিন কিছু মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন। কিছুদিন পর তারা টের পেলেন একেবারে ভাঁওতাবাজি, প্রতারণা। আজ মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। তারা এই সরকার থেকে মুক্তি চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের সঙ্গে রাষ্ট্রের একটা চুক্তি থাকে। আমাদের সংবিধানে আছে ৫ বছর পর পর এখানে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আসবে, যাদের জবাবদিহিতা থাকবে। সেই জবাবদিহিতা এখন আর নেই।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার মতো লোক দিয়েই দেশের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। সার্চ কমিটি যাদের দিয়ে করেছে, তারা প্রত্যেকেই তাদের লোক।

কৃষক শফিউদ্দিনের চলে যাওয়ায় গভীর শোক প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যেসব আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কারণে তাঁর এই চলে যাওয়া, সেইসব সন্ত্রাসীদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রদর্শন করছি। বর্তমানে ভোটারবিহীন সরকারের যে দুঃশাসন, নৈরাজ্য, ফ্যাসিবাদের যে আগ্রাসন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শফিউদ্দিনের এই আত্মহনন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, যা কিছু অর্জন সব কিছু তাঁর সরকারের আমলে হয়েছে। সব কিছুর স্বপ্ন দেখেছিলেন তার পিতা। উন্নয়ন অর্থনীতি তারই স্বপ্ন, ভাষা আন্দোলনও তারই স্বপ্ন। যারা স্বাধীনতার সংগ্রামে বহু আগে থেকে জড়িত, আমাদের সামনে এসমস্ত কথা অর্থহীন মনে হয়।’

নিজেকে বয়স্ক মানুষ উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় আসার পর তাদের দুঃশাসনের কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ সংগঠিত হয়েছিল। যেখানে লক্ষাধিক মানুষ না খেয়ে মারা গেছে। রংপুরের বাসন্তী মাছের জাল পড়ে লজ্জা নিবরণ করেছেন। মা মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের সামনে লাফ দিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করছে। বাবা মেয়েকে নিয়ে আত্মহ্যা করেছে। চাঁদপুরে সন্তান বিক্রি করে দিচ্ছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার দাবি করে কৃষি উৎপাদনে শীর্ষে পৌঁছে গেছে। গত বছর ৬৭ লাখ টন খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।

কৃষির বৈপ্লবিক পরিবর্তন করেছেন জিয়াউর রহমান উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কৃষকদের জন্য এই সরকার কিছুই করেনি। যারা প্রান্তিক মানুষ আছে তাদের আড়াই হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল; তার ৯০ শতাংশ আ.লীগের দালালদের কাছে পৌছে গেছে। কৃষির উন্নয়নের জন্য মেশিন ট্রাক্টর দেওয়া শুরু করেছিল, তার ৯০ শতাংশ আওয়ামী লীগের ঘরে চলে গেছে। ব্যবসায়ীরা পরিষ্কার করে বলেছে, তারা কোন প্রণোদনা পায়নি।’

প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।