জনবান্ধব পুলিশিং সেবার প্রত্যয়ে এসপি আলিমুজ্জামান
একটি জনবান্ধব পুলিশিং ব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ়প্রত্যয়ে কাজ করে চলছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলিমুজ্জামান (বিপিএম-সেবা)। এই কর্মকে বাস্তবায়িত করতে টিম সঙ্গে নিয়ে দিনরাত ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। ঘটনা ঘটার দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হয়ে নিজেই কাজ শুরু করেন ঘটনার পেছনের ঘটনা তুলে নিয়ে আসার কাজে। আর এই কাজে তাঁর টিম ও সাধারণ মানুষ এক হয়ে হাত বাড়িয়ে তাঁকে তথ্য উদঘাটনেও সাহায্য করে থাকেন।
এসপি আলিমুজ্জামান একটি স্লোগান ধারণ করে কাজ করছেন ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’। তিনি এটি শুধু স্লোগানের মধ্যে রাখতে চান না, এটি বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামানের নেতৃত্বে যা করছে ফরিদপুর জেলা পুলিশ।
অপরাধ দমনে সাহসী ভূমিকা
যৌন হয়রানি, জঙ্গিবাদ, মাদক বাণিজ্য, হত্যা, সড়কে ডাকাতি মামলাসহ সব ধরনের অপরাধ দমনে এসপি আলিমুজ্জামানের সাহসী ভূমিকা নজর কেড়েছে বাংলাদেশ পুলিশের। জেলার বড় বড় সব ক্লুলেস হত্যাসহ অপরাধের যেকোনো বিষয় প্রযুক্তির সহযোগিতায় অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি সামনে তুলে নিয়ে এসেছেন। এ ক্ষেত্রে মধুখালীর লিপি হত্যা ও শিশুসহ কয়েকটি ঘটনা, ফরিদপুর সদর উপজেলার ফাতেমা হত্যা, বেড়িবাঁধে এক নারী হত্যা, ইজিবাইক চালক হত্যা, ভাঙ্গার গোলচত্বরে গাড়ির হেলপার হত্যাসহ বিভিন্ন ঘটনায় খুব দ্রুত সময়ে উদঘাটন করে অপরাধ দমনে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন।
আর্তমানবতার সেবায় অসহায়ের পাশে
ফরিদপুর জেলা পুলিশ তাদের পুলিশ লাইন্সের পাশে অবস্থিত দেয়ালে অন্যরকম এক উদ্যোগ নিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামানের উদ্যোগে এই আর্তমানবতার সেবায় অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। এখানে যে কেউ পারেন তাঁর অব্যবহৃত কাপড়টি রেখে আর্তমানবতার সেবায় অংশগ্রহণ করতে।
যুবকদের মধ্যে দেশপ্রেমবোধ
দায়িত্ব পালনের সঙ্গে যুবকদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তুলতে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে জেলা পুলিশের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় আয়োজন করা হচ্ছে অপরাধমুক্ত ভাবনা বিষয়ক আলোচনা। একই সঙ্গে মাদকের ভয়াবহতা থেকে কীভাবে তারা দূরে থাকবে, সেই বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন
দুটি প্রক্রিয়াই ছিল দালাল বাহিনীর হাতে জিম্মি এত দিন। সেই জিম্মি ব্যবস্থাকে এসপি আলিমুজ্জামান করেছেন সহজ ও দ্রুততর। এখন একটি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেতে একজন মানুষকে আর ঘুরতে হয় না। এক সপ্তাহ ও কোনো ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ দিনের মধ্যে এটা নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন এখন হয়েছে অনেক সহজ ও দ্রুততর। এখন সাধারণ মানুষকে একটি পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন হয়ে যেতে সময় লাগে মাত্র তিন দিন। এ ক্ষেত্রে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। যা এর আগে টাকা ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব হতো না।
নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক সহায়তা ডেস্ক স্থাপন
এসপি আলিমুজ্জামান যোগ দেওয়ার পর থেকে নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের প্রতি বিশেষ নজর দিয়ে তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করা হচ্ছে। এরই মধ্যে প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক সহায়তা ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে তারা কোনো রকম ঝামেলা ছাড়া অতিদ্রুত সেবা নিতে পারবে।
পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ
ফরিদপুরে প্রায় ২০ লাখ মানুষের (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী) নিরাপত্তায় মাত্র এক হাজার ৩৬৩ জন পুলিশ পর্যাপ্ত নয়। নানা সীমাবদ্ধতা ভাবনায় রেখে জেলার নয়টি উপজেলা ও পাচঁটি পৌরসভাসহ ৮১টি ইউনিয়নে গঠন করা হয়েছে কমিউনিটি পুলিশিংয়ে স্থানীয় কমিটি। কমিউনিটি পুলিশিং এবং গ্রাম পুলিশিং কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে দিনরাত কাজ করেছেন পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান। এসব প্রচেষ্টার কারণে কমিউনিটি পুলিশিং ও গ্রাম পুলিশিং কার্যক্রম আগের চেয়ে অনেক বেশি গতিশীল বলে মনে করে সচেতনমহল এই ফরিদপুরে।
নাগরিক তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা
এসপি আলিমুজ্জামান কাজ করে চলছেন জেলার বাসিন্দাদের নাগরিক তথ্য তৈরির কাজে, যাতে তাদের সব বিষয় একটি অনলাইন ডাটাবেসে থাকে। এতে সামনের দিনে যেকোনো পুলিশি তথ্য আর খুঁজতে বেশি সময় না লাগে। এতে একজন মানুষ সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে পারবে পুলিশ। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনার এটি একটি বড় গঠনমূলক ব্যবস্থা বলে ধরছেন বিশিষ্টজনরা।
অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি সহায়তা ব্যবস্থা
এখন থানায় এসে একটি অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি করতে কোনো ঘুষ বা প্রভাব খাটাতে হয় না। এখন যেকোনো সাধারণ মানুষ থানায় এসে অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরি করতে পারেন।
এ ছাড়া পেশাগত দায়িত্ব পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম সেবা) এবং ২০১৭ ও ২০১৯ সালে দুবার এসপি আলিমুজ্জামান অর্জন করেন আইজি ব্যাচ। ২০১৯ সালের ৭ জুলাই ফরিদপুর যোগ দেওয়ার পর থেকেই তিনি শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।