জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল, সহজ সমাধান আনছে ইসি

Looks like you've blocked notifications!

জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) থাকা তথ্যের ছোটখাটো ভুল সহজে সংশোধনের পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এনআইডি সম্পর্কিত সেবায় জনগণের দুর্ভোগ কমাতে অ্যাডভান্সড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে তারা। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, এনআইডিতে থাকা ছোট ভুলভ্রান্তি উপজেলা পর্যায়ের ইসি কার্যালয়েই সংশোধন করা যাবে। আর বড় ভুলগুলো ঢাকার এনআইডি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সংশোধন করতে হবে। তবে আরো বড় ভুলভ্রান্তি সংশোধনে ইসির বৈঠকে অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

যদিও সব ধরনের সমস্যা ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সমাধানের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন এনআইডি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

তাঁরা আরো জানান, জনগণের ভোগান্তি লাঘবে কমিশন অ্যাডভান্সড ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে এবং এনআইডি পরিষেবা সরবরাহে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশে সবচেয়ে অত্যাধুনিক উপায়ে এনআইডি তথ্যভান্ডার হালনাগাদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আগামী দুই মাসের মধ্যে এনআইডি কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে ব্যাপক উন্নতি হবে বলে আশা করছি।’

এনআইডি মহাপরিচালক আরো জানান, স্মার্ট এনআইডি কার্ডগুলো সরাসরি ঢাকা থেকে এবং লেমিনেটিং করা কার্ডগুলো জেলা পর্যায়ের কার্যালয় থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

‘এখন ইসির উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয়গুলোতে লেমিনেটেড কার্ড মুদ্রণের ক্ষমতা অর্পণের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে,’ উল্লেখ করে সাইদুল ইসলাম আরো বলেন, ‘জনগণকে উন্নত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কার্ড ম্যানেজম্যান্ট সফটওয়্যার ইনস্টল করা হবে।’

এনআইডি সম্পর্কিত সমস্যাগুলোকে চার প্রকারে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, সিলি (সাধারণ ভুল), মাইনর (ছোটখাটো), ক্রিটিক্যাল (গুরুতর) ও সুপার ক্রিটিক্যাল (অতি গুরুতর) ভুল।

এ ব্যাপারে এনআইডি মহাপরিচালক সাইদুল বলেন, ‘সিলি ও মাইনর ভুলগুলো উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয় থেকে সংশোধন করা যাবে। কিন্তু ক্রিটিক্যাল ভুলগুলো ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সংশোধন করতে হবে এবং সুপার ক্রিটিক্যাল কোনো ভুল দেখা দিলে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক থেকে অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।’

সাইদুল ইসলাম জানান, পরিষেবা গ্রহণকারীদের ভোগান্তি হ্রাসের লক্ষ্যে ইসি এরই মধ্যে ভুলত্রুটিগুলোকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

এ ছাড়া দেশব্যাপী থাকা এনআইডি তথ্যভান্ডারে প্রবেশের ক্ষেত্রে অনিয়ম রোধ করতে পাসওয়ার্ড ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিবর্তনের মতো পদক্ষেপ নিচ্ছে কমিশন।

এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক আরো বলেন, ‘ইসি কর্মকর্তাদের এনআইডি তথ্যভাণ্ডারে প্রবেশের জন্য প্রতিবার ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) ও আঙুলের ছাপের প্রয়োজন হবে।’

সম্প্রতি ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পর এবার নড়েচড়ে বসেছে ইসি।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকার বাইরে রাখতে কমিশন তার কর্মকর্তা, টেকনিশিয়ান, ডাটা-এন্ট্রি অপারেটর এবং ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত অন্য কর্মীদের বিষয়ে নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করছে।

কর্মকর্তারা আরো জানান, কেন্দ্রীয় এনআইডি কার্যালয়কে এখন পুনর্গঠিত করা হচ্ছে, উন্নততর সেবা দিতে জনবল বাড়িয়ে উপজেলা কার্যালয়গুলোকে শক্তিশালী করা হচ্ছে এবং ইসি এরই মধ্যে ১০০ টেরাবাইট ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি অগ্রিম তথ্যভাণ্ডার কিনেছে।

কমিশন নির্বাচনের জন্য ২০০৭ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদের পর প্রথমবারের মতো লেমিনেটেড এনআইডি কার্ড চালু করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালে ভোটারদের মধ্যে স্মার্ট এনআইডি বিতরণ শুরু হয়। তবে ১০ কোটি ৪০ লাখের বেশি ভোটার এখনো স্মার্টকার্ড পাননি।