জোনভিত্তিক লকডাউন শুরুর খবর সঠিক নয় : শাহ আলী ফরহাদ

Looks like you've blocked notifications!

‘এখনই শুরু হচ্ছে না জোনভিত্তিক লকডাউন। রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন দেওয়ার আগে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে জানানো হবে’ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ।

আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রেড জোনে লকডাউন ঘোষণা দেওয়ার আগে সরকারের পক্ষ থেকে সেসব এলাকার জন্য চিকিৎসা, খাদ্য সরবরাহ, নিরাপত্তা এসব বিষয় নিশ্চিত করা হবে। এ ছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরের একাধিক এলাকায় রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন দেওয়া হচ্ছে, এমন খবর একদমই ঠিক নয়। এটা একটা বিভ্রান্তিমূলক খবর।’

শাহ আলী ফরহাদ আরো বলেন, ‘কোন এলাকা রেড জোনের আওতায় আসবে, তা নির্ভর করবে সে এলাকার স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার তথ্যের ও স্থানীয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।’

এদিকে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ বিশেষ সহকারী এনটিভি অনলাইকে জানান, রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন দেওয়ার আগে যথাযথভাবে ওই এলাকাতে মাইকিং করে এলাকাবাসীকে জানানো হবে। ঘোষণা দেওয়ার আগে সরকারের তরফ থেকে সেসব এলাকার জন্য চিকিৎসাসেবা, খাদ্য সরবরাহ, নিরাপত্তা এসব বিষয় নিশ্চিত করা হবে। রেড জোন ঘোষণা হলে সেখানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে। সেখানে অবস্থানরত সরকারি, রেড জোন আধা-সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সকল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করবেন। তাই এখানে প্রস্তুতির বিষয়ও আছে।

শাহ আলী ফরহাদ আরো জানান, কোনো একটি এলাকা রেড জোন মানেই যে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে, বিষয়টি তেমনও নয়। যেমন, যদি মোহাম্মদপুর এলাকা রেড জোন হয়, তাহলে পুরো এলাকাই লকডাউন হবে না। এলাকার যে অংশে বেশি সংক্রমিত রোগী থাকবেন, শুধু সে অংশটুকুই লকডাউনের আওতায় আসবে। একসঙ্গে সব এলাকায় লকডাউন হবে না। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকায় হবে। এ প্রস্তুতিগুলো শেষ করেই সরকারের পক্ষ থেকে এলাকাভিত্তিক নির্দেশনা বা ঘোষণা আসব। তার জন্য কিছু সময়ও লাগবে। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা বা কোনো ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বিভ্রান্তিমূলক খবর পরে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সরকার দুই মাসের বেশি সময় সারা দেশে ‘লকডাউন’ জারি রাখে। এরপর গত ৩১ মে থেকে বেশিরভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়।

তবে এরপর প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এলাকা ধরে ধরে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনুযায়ী লাল, সবুজ ও হলুদ জোনে ভাগ করে প্রয়োজন অনুযায়ী বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তার ভিত্তিতে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার পরীক্ষামূলকভাবে অবরুদ্ধ বা লকডাউন করে রাখা হয়েছে।

এরপর করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটি গত শনিবারের সভায় দেশের ‘রেড জোন’গুলো চিহ্নিত করে। তাতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৪৫টি এলাকা ‘রেড জোন’-এর মধ্যে পড়ে।

লাল, হলুদ, সবুজ—এ তিন ধরনের এলাকায় কীভাবে কাজ চলবে, তা নিয়ে গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নির্দেশনা দিয়েছে। সিটি করপোরেশন এলাকায় পুরো দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হাতেই দেওয়া হয়েছে।

‘রেড জোন’ অবরুদ্ধ করার বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ ইমদাদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, রোববার রেড জোনগুলোর তালিকা তাঁরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পেয়েছেন। গতকাল সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ‘লকডাউন’ বাস্তবায়নের নির্দেশনা পেয়েছেন।

শাহ ইমদাদুল হক বলেন, ‘গাইডলাইনে এ ব্যাপারে ক্ষমতা দেওয়া আছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে। সেখানে কার কী দায়িত্ব, বলা আছে। সে অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে বলতে হবে লকডাউনের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা এখনো কিছুই বলছে না। সবাই সহযোগিতা না করলে, আমরা এ বিষয়টা কীভাবে বাস্তবায়ন করব? তবে খুব শিগগির আমরা হয়তো স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা পাব।’