ঝালকাঠিতে ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত
সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন তাঁকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ শাখার এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত ১৬ জুন সংশ্লিষ্ট শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্তের এ আদেশ দেওয়া হয়।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবেকুন নাহার আজ মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাময়িক বরখাস্তের আদেশে উল্লেখ করা হয়, গত তিন বছরের ইউনিয়ন পরিষদের ট্যাক্সের ১২ লাখ ৮২ হাজার ৩৫০ টাকা মাসিক সভায় আলোচনা বা রেজুলেশন না করে আত্মসাৎ করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান। তাঁর বিরুদ্ধে করোনাকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের চাল আত্মসাৎ এবং প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের বরাদ্দ অসহায় মানুষের জন্য আড়াই হাজার টাকার অর্থ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তিনি এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে তথ্য সেবাকেন্দ্রের মালামাল না কিনে অর্থ আত্মসাৎ, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ফটোকপি মেশিন কেনা বাবদ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎ, ইউনিয়ন ভিত্তিক করোনার টিকা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আপ্যায়নের ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ, ট্রেড লাইসেন্স ফি, ওয়ারিশ ফি, ওয়ারিশ সনদ ফি, অটোরিকশা লাইসেন্স ফি-এর তিন লাখ টাকা আত্মসাৎ, সাবেক ইউপি সচিব দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনসহ সব কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া ২০ সেট রিংস্লাব ইউপি সদস্যদের না জানিয়ে বিতরণের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়।
এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে পুরোনো সেতুর লোহার মালামাল বিক্রির অভিযোগ রয়েছে।
এসব ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানের বিরুদ্ধে স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ইউএনও সাবেকুন নাহার জানান, মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন পাওয়ার পরে পোনাবালিয়া ইউপির চেয়ারম্যান আবুল বাসার খানকে গতকাল সোমবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন তাঁকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান বলেন, ‘আমাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সময় মতো আমি এর জবাব দেব। আমি কখনও কোনো দুর্নীতি করিনি।’