ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রির দ্বিতীয় দিনেও উপচে পড়া ভিড়

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রির দ্বিতীয় আজ রোববারও রাজধানীর পাঁচটি স্টেশনে ছিল টিকেট প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড়।
কাঙ্ক্ষিত টিকেট পেতে আগের রাত থেকে অনেকে কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন লাইনে। কেউ কেউ এসেছিলেন রাত ৮টার দিকে। তারপরও অনেকে টিকেট পাননি বলে রয়েছে অভিযোগ। গতকাল শনিবার অনলাইনে টিকেট না পেয়ে আজ লাইনে দাঁড়িয়েছেন বলে রয়েছে অভিযোগ।
সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার শুরু হয় ঈদ উপলক্ষ্যে দ্বিতীয় দিনের মতো টিকেট বিক্রি। এদিন ২৮ এপ্রিলের টিকেট বিক্রি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঙ্ক্ষিত টিকেট পেতে আগের রাত থেকে আসা অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেটের জন্য অপেক্ষা করছেন। এরই মধ্যে অনেকে চেষ্টা করে যাচ্ছেন অনলাইনেও। তবে তাঁদের অভিযোগ, কোনোভাবেই ঢোকা যাচ্ছে না অনলাইন সার্ভারে।
টিকেটপ্রত্যাশীদের অনেকে সঙ্গে এনেছেন মাদুর। লম্বা লাইনের অনেক পেছনে থাকায় সে মাদুর বিছিয়ে অপেক্ষা করছেন অনেকে। কেউ বা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্লান্তি হয়ে বসেছেন পত্রিকা বিছিয়ে।
জানা গেছে, কাউন্টারের পাশাপাশি অনলাইনে ৫০ শতাংশ টিকেট রেখেছে রেলওয়ে। আর কমলাপুর ছাড়াও রাজধানীর আরও ৪টি স্টেশনে বিক্রি হচ্ছে ঈদ উপলক্ষ্যে অগ্রিম টিকেট।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, কমলাপুর রেলস্টেশনে চাপ কমাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
যদিও বাস্তবতায় ভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে। উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে কমলাপুর স্টেশনে।
লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে একজন টিকেটপ্রত্যাশী জানান, গতকাল রাত ৮টা থেকে স্টেশনের লাইনে এসে বসে আসি। আমি আসার আগে আরও অনেকে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন বেলা ১১টা। কিন্তু, টিকেট পাইনি।
আরেক টিকেটপ্রত্যাশী বলেন, ‘অনলাইনে টিকেট না পেয়ে সরাসরি কিনতে এসেছি। কিন্তু, যে দীর্ঘ লাইন, তাতে পাব বলে মনে হচ্ছে না। তাই লাইনে দাঁড়িয়ে অনলাইনেও ঢুঁ মারছি। কিন্তু, ঢুকতে পারছি না।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ব্যবস্থাপক মাসুদ সরোয়ার বলেন, ‘অর্ধেক টিকেট কাউন্টারে এবং অর্ধেক টিকেট অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েও অনেককে ফিরে যেতে হচ্ছে। কারণ, আসন সংখ্যা যতগুলো, তার বেশি তো বিক্রি হবে না।’
খুলনায় যাবেন বলে টিকেট নিতে এসেছেন এক ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘অনলাইনে কালও চেষ্টা করেছি, পাইনি। আজ সরাসরি এলাম। এখানেও পাব বলে মনে হয় না। আমার আসার অনেক আগেই অনেকে এসেছেন। আমরা কর্মজীবী, ঈদের এ সময়টিতে জনগণের সেবা দিতে আমাদের অনেক কাজ থাকে। ছুটি পাওয়া যায় না। অনলাইনে সহজলভ্য হলে ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।’
অনলাইন থেকে টিকেট কিনতে ভোগান্তির অভিযোগ করেন আরও অনেকে। তাঁরা জানান, রেলওয়ে অগ্রিম টিকেট কিনতে যে লিংক দিয়েছে, সেখানে লগইন করা যাচ্ছে না। লগইন করতে পারলেও নির্ধারিত আসন সব বিক্রি হয়ে গেছে বলে দেখা যাচ্ছে।
লগইন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ব্যবস্থাপক মাসুদ সরোয়ার বলেন, ‘একসঙ্গে অনেক লোক লগইন করছেন বলে এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।’