ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত শরীয়তপুরের তিনজনের দাফন সম্পন্ন

Looks like you've blocked notifications!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাকলী বেগমের বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি। ছবি : এনটিভি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় নিহত শরীয়তপুরের তিনজনের গ্রামের বাড়িতে মরদেহ দাফন করা  হয়েছে। নিহতদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনদের কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার আরশিনগর ইউনিয়নের মাদবরকান্দির বাসিন্দা অলু হাওলাদারের মেয়ে কাকলী বেগম (২২), পাশের গোসাইরহাট উপজেলার আলাওলপুর ইউনিয়নের চর জালালপুর টেকপাড় গ্রামের বাসিন্দা ও কাকলী বেগমের মামি শাশুড়ি আমাতন বেগম (৪৫), আমাতন বেগমের মেয়ে মরিয়ম (৪)। আজ বুধবার নিহতদের নিজ নিজ এলাকায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

কাকলীর পরিবারের সদস্য ও সখিপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার সিলেটে হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজার জিয়ারতের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিল কাকলী, তাঁর মেয়ে, শাশুড়ি, মামাশ্বশুর, মামি শাশুড়ি ও মামাশ্বশুরের মেয়ে মরিয়ম। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে তারা বাড়ি ফিরতে না পারায় সিলেটে তাদের এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়াতে যায়। সেখানে চার দিন থাকার পর গত সোমবার রাতে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় তারা। তাদের বহনকারী ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলস্টেশন এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে কাকলী বেগম, তার মামি শাশুড়ি আমাতন বেগম ও আমাতনের মেয়ে মরিয়মসহ ১৬ জন নিহত হয়।

দুর্ঘটনার পর কাকলীর শ্বশুর ও তাঁর পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাকলী ও অন্যদের লাশ শনাক্ত করে। পরে আজ বুধবার সকালে কাকলী এবং ও দুপুরে অন্যদের লাশ নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

একই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয় কাকলী বেগমের মেয়ে শিশু মাহিমা (৩), শাশুড়ি রাহিমা বেগম (৪৫) ও মামাশ্বশুর জাহাঙ্গীর মিয়া (৫০)। তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে কাকলী বেগমের মেয়ে মাহিমা ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি রয়েছে। মাহিমার চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা এবং সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক।

ওসি এনামুল হক বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা জানতে পেরেছি। তাদের এনে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। কাকলী বেগমের মেয়ে মাহিমার যাবতীয় চিকিৎসার দায়িত্ব পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম নিয়েছেন।’

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর আল নাফিস বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা অবগত হয়েছি। কাকলীর পরিবার যদি হতদরিদ্র হয় তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হবে।’