ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপালের জামিন বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট

Looks like you've blocked notifications!

৮০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার ও বরখাস্ত হওয়া সিলেটের কেন্দ্রীয় কারাগারের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস​) পার্থ গোপাল বণিককে অস্বাভাবিকভাবে জামিন দেওয়ায় বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেনকে সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে পার্থ গোপাল বণিককে অস্বাভাবিকভাবে জামিন দেওয়ার বিষয় নিয়ে চ্যানেল ২৪-এ প্রচারিত প্রতিবেদনের ভিডিও ক্লিপ আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

রাজধানীর নর্থ রোডের ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের মামলায় পার্থ গোপাল বণিকের জামিন বাতিল চেয়ে গতকাল রোববার হাইকোর্টে আপিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর আগে গত ১৭ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেনের ভার্চুয়াল আদালত আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছিলেন। এরপর তিনি কারামুক্ত হন।

গত বছরের ৪ নভেম্বর পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর ১৫ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। একই বছরের ২৪ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ডিআইজি প্রিজনস পার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মোট ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, পার্থ গোপালের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। অর্থাৎ, তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ৮০ লাখ টাকা বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে উপার্জন করে অর্থপাচারের উদ্দেশ্যে নিজ বাসায় লুকিয়ে রেখেছেন বলে প্রমাণ হয়। 

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ২০১৪ সালে তিনি ৩১ হাজার ২৫০ টাকা বেতন স্কেলে কারা উপ-মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তাঁর এ বেতন স্কেলের সঙ্গে এত টাকা অর্থ উপার্জন অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি তাঁর কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তা উত্তোলন করেননি বা তিনি কখনও এ অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি, যা দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফের নেতৃত্বে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তাঁর বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয়।

পরে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পরে ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেপ্তারের দিন থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।