ডিজেলের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি বিজিএমইএর
আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজেলের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) । পোশাক কারখানাগুলোতে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যের সঙ্গে ডিজেলের দাম সমন্বয়ের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে এই সমিতি।
সংগঠনটির সভাপতি ফারুক হাসান জানান, বিজিএমইএর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ৩ অক্টোবর চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিজেলের দাম আগের মূল্যে নিয়ে আসার প্রস্তাব করেছি।
ফারুক হাসান বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সবকিছুর দাম বেড়েছে। এরই মধ্যে ডিজেলের দাম বাড়ানোর কারণে বাস-ট্রাকসহ যাতায়ত ভাড়া বেড়েছে অনেকটা। এতে মানুষ অস্বস্তিতে রয়েছে।’
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি বিশ্ববাজারে দেশের পোশাকপণ্য রপ্তানি কমেছে। চলতি মাসেও কমার ইঙ্গিত মিলছে। বায়াররা এরই মধ্যে অনেক অর্ডার স্থগিত এবং বাতিল করছে। এসবের মধ্যেই গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট তৈরি হয়েছে। সংকট কাটাতে জেনোরেটর দিয়ে উৎপাদন করতে হচ্ছে। এ কারণে প্রচুর পরিমাণ ডিজেল দরকার হচ্ছে। কিন্তু, ডিজেলের দাম বাড়ায় উৎপাদন ব্যয়ও অনেক বাড়ছে। আবার বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম কমেছে। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমাদের দেশেও ডিজেলের দাম সমন্বয় করে আগের দাম আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রমে জ্বালানির অপরিহার্যতা অত্যধিক। কারখানাগুলোয় এখন লোডশেডিং চলছে চরমে। এ কারণে কারখানার উৎপাদন অব্যাহত রাখতে জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতে ডিজেলের চাহিদা বাড়ছে। ২০২১ সালে ডিজেলের মূল্য ছিল প্রতি লিটার ৮০ টাকা, বর্তমানে তা ১০৯ টাকা। বহির্বিশ্বে ডিজেলের মূল্য কমায় আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হলে তৈরি পোশাক শিল্পসহ সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন দিনে সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়া হচ্ছে। সাপ্তাহিক ছুটি এক দিনের স্থলে দুদিন করা হয়েছে। আবার প্রাত্যহিক কর্মঘণ্টা এক ঘণ্টা কমানো হয়েছে। এতে কিছুটা হলেও জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে।
বাধা মোকাবিলা করে আজ অত্যাধুনিক ও নিরাপদ পোশাক উৎপাদনের সবুজ কেন্দ্র পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮২ শতাংশ আসে তৈরি এ খাত থেকে। এ খাতে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছে।
বিজিএমইএ ২০৩০ সালে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। সুতরাং, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখতে ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন অব্যাহত রাখতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে পুননির্ধারিত মূল্যে ডিজেল সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়।