ডিসি-এসপিদের দলের পক্ষ হয়ে কাজ না করার নির্দেশ সিইসির

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) কোনো দলের পক্ষ হয়ে কাজ না করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
আজ শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ডিসি ও এসপিদের সঙ্গে এক সভায় সিইসি এমন নির্দেশনা দেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনাদের কঠোরভাবে দায়িত্ব-সচেতন হতে হবে। কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন বিষয়ে আপনাদের কর্ম ও আচরণে এমন কিছুর প্রতিফলন যেন না হয়, যাতে জনগণ ভাবতে পারেন যে আপনারা কোনো একটি দলের পক্ষে কাজ করছেন।’
গণতন্ত্রের প্রয়োগ, চর্চা ও বিকাশে স্ব স্ব অবস্থান থেকে অবদান রাখার নির্দেশনা দিয়ে সংবিধান, আইন ও বিধি-বিধানের আলোকে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। যে কোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখবেন। জনগণের স্বাধীন ভোটাধিকার প্রয়োগের সহায়ক অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করতে হবে। নিরপেক্ষ থেকে আপনারা সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে প্রজাতন্ত্রের কর্মের কাঙ্খিত মান ও আদর্শকে সমুন্নত রাখবেন।’
দায়িত্ব পালনে ন্যূনতম শৈথিল্য প্রদর্শন করা যাবে না উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতা প্রয়োগে কঠোর অবস্থানে থাকবে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে উপেক্ষা করা যাবে না জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সংসদীয় পদ্ধতির বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রশ্নে মতপার্থক্য বা মতের ভিন্নতা থাকতেই পারে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ বিভাজন নিয়ে সংশয় থাকলেও আমরা আশা করি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ ও সার্বিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের সদিচ্ছা, প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতা যে কোনো সংকট ও সংশয় নিরসনে সামর্থ্য রাখবে। মতৈক্য ও সমঝোতা হবে। সংকট ও সংশয় কেটে যাবে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সাধারণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।’
ইভিএমে নির্বাচন বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘ইভিএম প্রশ্নেও বিতর্ক রয়েছে। আমরা কেবল বিশ্বাস করি না, প্রমাণ পেয়েছি। ইভিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্বাচনী সহিংসতা ও কারচুপি নিয়ন্ত্রণ সহজতর। অনূর্ধ্ব ১৫০টি আসনে, প্রাপ্যতা সাপেক্ষে, ইভিএম প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। তবে, প্রয়োজনে সব আসনে কিংবা ১৫০ এর অধিক আসনে ব্যালটে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও সামর্থ্য আমাদের থাকবে। সে লক্ষ্যে নির্বাহী ও পুলিশ প্রশাসনকেও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সামর্থ্য ও প্রস্তুতি রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশে একই দিনে একই সময়ে ৪২ থেকে ৪৫ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। কর্মযজ্ঞটি সহজসাধ্য না হলেও অসাধ্য নয় এবং সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে সার্থকভাবেই সাধন করতে হবে।’