ঢাকায় দূরপাল্লার বাস ঢুকছে না, যাচ্ছেও না

Looks like you've blocked notifications!
আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকার দৃশ্য। ছবি : এনটিভি

রাজধানী ঢাকাকে সারা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সাত জেলায় চলছে কঠোর লকডাউন। সেই লকডাউনের কারণে রাজধানী ঢাকায় দূরপাল্লার গণপরিবহণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে না পুলিশ। ঢাকার বাইরে থেকেই বাসগুলোকে ফিরিয়ে দিচ্ছে।

আবার ঢাকার বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো বাসও ছেড়ে যাচ্ছে না। যদিও ঢাকা ছাড়ার জন্য মহাখালী, সায়েদাবাদ বা গাবতলীর মতো বাসস্ট্যান্ডে এদিন যাত্রীরা বৃষ্টিতে ভিজে এসে ফিরে গেছেন। অপরদিকে সদরঘাট থেকেও এদিন কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীতে সড়ক পথে বিভিন্ন প্রবেশ মুখে এই চিত্র দেখা গেছে।  

সকালে সরজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেখা যায়, সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত রাজধানীর গাড়িগুলো মহাসড়কে ঢাকার মধ্যে চলাচল করছে। তবে দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে না। বিশেষ করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুরের মতো দূরপাল্লার বাস চলছে না।

এর মধ্যে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় হাইওয়ে ও থানা পুলিশ আলাদাভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনের গতিরোধ করছে। এরপরে যানবাহনগুলো ঘুরিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে পুলিশ।

এদিকে রাজধানীতে প্রবেশের সংযুক্ত মহাসড়ক ঢাকা-আরিচা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক দিয়ে আমিনবাজারে প্রবেশ করতে পারছে না গণপরিবহণ।

আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকার দৃশ্য। ছবি : এনটিভি

এর মধ্যে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুর, বলিয়াপুর ও আমিনবাজার অংশে পুলিশ পরিবহণগুলো রাজধানীতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে সেখান থেকে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। 

মোটরসাইকেল ও  প্রাইভেটকার ছাড়া সব পরিবহণকেই থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে এসব পয়েন্টে। সড়কে যান চলাচল করতে না পারায় দীর্ঘ যানজটও দেখা গেছে ঢাকাগামী লেনে।

সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মহাখালী ও গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, এসব বাস টার্মিনাল থেকে কোনো দূরপাল্লার যানবাহন ছেড়ে যায়নি। এসব এলাকার টিকিট কাউন্টারও বন্ধ রয়েছে। ঢাকার বাইরে যাওয়ার উদ্দেশে আসা বাসগুলোকে গাবতলী পশুর হাটের সামনে থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় প্রবেশের উদ্দেশে দূরপাল্লার যেসব যানবাহন আসছে, সেগুলোকে আমিনবাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

যাত্রীদের উদ্দেশে বাস টার্মিনালে মাইকিং করে বলা হচ্ছে, দূরপাল্লার কোনো যান চলবে না। যাত্রীরা যেন অপেক্ষা না করে বাসায় ফিরে যায়। পাশাপাশি পরিবহণ শ্রমিকদেরও অযথা ঘোরাফেরা না করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

গতকাল সোমবার করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দেশের সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন চলবে।

গতকাল বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। জেলাগুলো হলো- নারায়াণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, লকডাউন চলাকালে সার্বিক কার্যাবলি (জনসাধারণের চলাচলসহ) সকাল ৬টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ সময়ে শুধু আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন—কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহণ, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর (নদীবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিস, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এবং পণ্যবাহী ট্রাক/লরি এই নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।

এই সাত জেলায় কী কী বন্ধ থাকবে—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সব বন্ধ থাকবে। মানুষও যাতায়াত করতে পারবে না। শুধু মালবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কিছু চলবে না। জেলাগুলো ব্লকড থাকবে, কেউ ঢুকতে পারবে না।’