ঢাকা ওয়াসায় নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল কি না তা জানা নেই : ডেইজি
ঢাকা ওয়াসায় নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল কি না তা জানা নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সাবেক কাউন্সিলর আলেয়া সারোয়ার ডেইজি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডেইজি বলেন, আমি যে অবস্থানে ছিলাম সেখান থেকে নিয়োগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয় ছিল না। আমি রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড সূত্রে ওয়াসার পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলাম। দায়িত্ব পালনকালে বরং আমি ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদ করেছি। ওয়াসায় নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল কি না আমার জানা নেই। এটা দুদক তদন্ত করে বলতে পারবে।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর পৌনে দুটা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামের একটি টিম। এছাড়া ‘দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টস’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাহমুদ হোসেনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
সাবেক কাউন্সিলর ডেইজি ডিএনসিসির সংরক্ষিত ১২ আসনের কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১৫ সালের নির্বাচনে সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এছাড়া তিনি ওয়াসার পরিচালনা পর্ষদেরও সদস্য ছিলেন।
এর আগে একই অভিযোগে ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন পর্যায়ের ডজন খানেক কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তিনটি ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ছয় প্রতিষ্ঠানের নথিপত্র তলব করে এর আগে চিঠি দিয়েছিল সংস্থাটি।
ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ছয়টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদদে ও নির্দেশে টাকাগুলো আত্মসাৎ করা হয়—এমন অভিযোগে তাকসিম এ খানসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন জমা পড়ে। পরে দুদকের এখতিয়ার বলে রায় দেন আদালত। ওই আবেদনের সূত্র ধরেই দুদকে আরও একটি অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে ওয়াসার পদ্মা জশলদিয়া প্রকল্পে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা, গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে ১ হাজার কোটি টাকা, গুলশান বারিধারা লেক দূষণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতিসহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর ধাপে ধাপে সময় বাড়িয়ে তিনি এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। বিতর্কিত তাকসিম এ খানের পুনঃনিয়োগের ক্ষেত্রেও বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ছাড়া প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো, ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট, ঘুষ লেনদেন, পদ সৃষ্টি করে পছন্দের লোকদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, অপছন্দের লোকদের ওএসডি করাসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে।