তরিকুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা কর্মসূচি

সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ সোমবার। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকায় অ্যাপোলো হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিএনপির পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ যশোরে মরহুমের কবর জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, কোরআন খতম, আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান।
এ ছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তরিকুল ইসলাম স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিএনপি নেতারা ছাড়াও বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য দেবেন।
তরিকুল ইসলাম ১৯৪৬ সালের ১৬ নভেম্বর যশোর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আলহাজ আবদুল আজিজ ছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও মা মোসাম্মৎ নূরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬১ সালে তিনি যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৬৩ সালে যশোর মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয় থেকে আইএ পাস করেন। এরপর তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৬৯ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
তরিকুল ইসলাম ছাত্র ইউনিয়নের মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে যশোর এমএম কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৩ সালে সর্বক্ষেত্রে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
তরিকুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবন ছিল বৈচিত্র্যপূর্ণ ও বর্ণাঢ্য। তিনি বহুবার কারাবরণ করেন এবং নির্যাতনের শিকার হন। ১৯৭০ সালে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগদান করেন তিনি। ১৯৭৩ সালে তরিকুল ইসলাম যশোর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে তিনি তিন মাস কারাভোগ করেন।
তরিকুল ইসলাম ১৯৭৮ সালে তিনি যশোর পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মরহুম মশিউর রহমান যাদু মিয়ার নেতৃত্বে ন্যাপ (ভাসানী) বিলুপ্ত হলে তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে যশোর সদর নির্বাচনী এলাকা থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময়ে তিনি জাতীয়তাবাদী দলের জেলা আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮২ সালের ৫ মার্চ তরিকুল ইসলাম সড়ক ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তিনি ১৯৮৬ সালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পান। ১৯৯০-এর গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তরিকুল ইসলাম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
১৯৯১ সাল থেকে বিএনপির রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালনকালীন তরিকুল ইসলাম পর্যায়ক্রমে সমাজকল্যাণ ও মহিলাবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, খাদ্য, তথ্য, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আমৃত্যু তিনি বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন।