তারেক জিয়া লন্ডনে শখ করে যাননি : গয়েশ্বর

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আজ বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বাধ্য হয়ে নিজ জন্মভূমি ছেড়ে তারেক জিয়াকে লন্ডনে থাকতে হচ্ছে। সেখানে তিনি শখ করে যাননি। তিনি বলেছেন, গুম, খুন, নারী ও শিশুসহ সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সারা বিশ্ব জেগে উঠেছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফরের মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ কথা বলেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় কিশোরগঞ্জে বন্যা পরবর্তী দুর্গতদের ফ্রি মেডিকেল সেবা এবং বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন গয়েশ্বর। এ সময় ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময়ে গ্রেপ্তার অবস্থায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর নির্যাতন এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে গুম এবং বুদ্ধিজীবী ও লেখক ফরহাদ মাজাহারের অপহরণ এবং দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষে বন্দি অবস্থা প্রসঙ্গ তুলে ধরেন গয়েশ্বর। 

গয়েশ্বর বলেন, ‘বিগত ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময়ে আমাদের নেতা তারেক রহমানের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁকে ওপর থেকে ফেলে দিয়ে কোমর ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। সেই নির্যাতনের চিত্র সাম্প্রতিক সময়ে নেত্র নেত্রনিউজ আবিষ্কার করেছে।’ 

গয়েশ্বর বলেন, ‘আমরা আগে শুনতাম বিভিন্ন জেলা, থানা ও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের টর্চার সেল আছে। কিন্তু, তারেক রহমানকে সরকার চালিত টর্চার সেলে নির্যাতন করা হয়েছিল। সেই সেল এখনও আছে বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বরাতে শোনা যায়। আপনারা জানেন না, সেখানে অনেক অজানা মানুষ এখনও আটক আছে। মাঝে মধ্যে এক-দুজন ছাড়া পেলেও তারা কথা বলে না, চুপচাপ দেশ থেকে বেরিয়ে যায়।’

বুদ্ধিজীবী ও লেখক ফরহাদ মাজাহার অপহরণ প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কয়েক বছর আগে বুদ্ধিজীবী ও লেখক ফরহাদ মাজাহারকে ঢাকা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে তাঁকে খুলনা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। অপহরণকারীদের মঙ্গে পুলিশের ঝগড়া হয়েছিল সেদিন। তাহলে, অপহরণকারীরা কারা?’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘সাবেক সংসদ সদস্য ও আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। তাঁকে কারা নিয়েছে এবং কোথায় নিয়েছে? আজ পর্যন্ত আমরা জানতে পারিনি।’

উপস্থিত সবার উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, জনগণের নেত্রী খালেদা জিয়া আজ গৃহবন্দি। জনগণের নেত্রী যদি গৃহবন্দি থাকে; জনগণও মুক্ত থাকতে পারে না।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিনি আমাদের সঙ্গে থাকতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে নিজ জন্মভূমি ছেড়ে তাকে লন্ডনে থাকতে হচ্ছে। সেখানে তিনি শখ করে যাননি। নির্যাতনের কারণে গুরুতর অবস্থায় জীবন রক্ষায় চিকিৎসার জন্য তাকে সেখানে যেতে হয়েছে।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘দেশে সব কিছু দাম বাড়ছে, কিন্তু আওয়ামী লীগের দাম কমছে। এখন তা শূন্যের কোঠায়। যেখানে আওয়ামী লীগ থাকে সেখানে গণতন্ত্র থাকে না। এই অবস্থায় আমাদের লড়াই ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াই নয়। আমাদের লড়াই হচ্ছে দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার লড়াই। আমাদের লড়াই হচ্ছে গণতন্ত্র ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লড়াই। এই লড়াইয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।