তিন আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই জাতীয় সংসদের শূন্যঘোষিত ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে।
এর মধ্যে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সকাল ৯টার দিকে ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাকি দুই সংসদীয় আসনে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হচ্ছে।
এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘ঢাকা-১০ আসনসহ তিনটি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা দিতে সেখানে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ অন্যান্য সুরক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।’
ঢাকা-১০ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম সাহতাব উদ্দিন জানান, এখানে ছয়জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এঁরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিএনপির শেখ রবিউল আলম, জাতীয় পার্টির হাজি মো. শাহজাহান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের নবাব খাজা আলী হাসান আসকারী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মিজানুর রহমান চৌধুরী ও পিডিপির আবদুর রহিম।
জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা-১০ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ১২ হাজার ২৮১ জন। এখানে ভোটকেন্দ্র ১১৭টি ও ভোটকক্ষ ৭৭৬টি। এই আসনের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২২ মার্চ পর্যন্ত ছয়জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২৩ মার্চ পর্যন্ত তিনজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসারসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
গাইবান্ধা-৩ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রাহমান জানান, এই আসনের উপনির্বাচনে ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এঁরা হলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জেলা বিএনপির সভাপতি মইনুল হাসান সাদিক, জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর ছেলে মইনুল রাব্বী চৌধুরী ও জাসদ সমর্থিত প্রার্থী এস এম খাদেমুল ইসলাম।
সাদুল্যাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনের ভোটার চার লাখ আট হাজার ৭৪ জন। এখানে ভোটকেন্দ্র ১৩২টি ও ভোটকক্ষ ৭৮৬টি। এই আসনে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২২ মার্চ পর্যন্ত ২০ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২৩ মার্চ পর্যন্ত দুজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসারসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।
বাগেরহাট-৪ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী জানান, এই আসনে দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এঁরা হলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. আমিরুল আলম মিলন ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত প্রার্থী সাজন কুমার মিস্ত্রী।
মো. ইউনুচ আলী জানান, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনের ভোটার দুই লাখ ৯৭ হাজার ৪৩৪ জন। এখানে ভোটকেন্দ্র ১৪৩টি ও ভোটকক্ষ ৬২৯টি। এই আসনে নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২২ মার্চ পর্যন্ত ২৩ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২৩ মার্চ পর্যন্ত দুজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসারসহ পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
গত ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে তাপস পদত্যাগ করায় তাঁর আসনটি শূন্য হয়।
গত ২৭ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকার মৃত্যুবরণ করায় এই আসনটি শূন্য হয়।
এদিকে ১০ জানুয়ারি বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন মারা যাওয়ায় এই আসনটিও শূন্য হয়। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পাঁচবার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন।